যুক্তরাষ্ট্রের ডিমের দাম সর্বকালে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। তাই ডিমের দাম কমাতে তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ডিম আমদানি করার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশ দুটির সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তারা। খবর বিবিসি

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির কৃষিসচিব ব্রুক রোলিন্স সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বল্প মেয়াদে আমরা শত শত মিলিয়ন ডিম আমদানির কথা ভাবছি। বার্ড ফ্লু মহামারির কারণে কৃষকদের কোটি কোটি মুরগি জবাই করতে হয়েছিল।’ সংকট মোকাবিলায় ১০০ কোটি ডলারের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন। এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত এসেছে।

এবারের নির্বাচনী দৌড়ে জেতার প্রতিযোগিতায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম কমানো হবে। তবে গত এক বছরে ডিমের দাম ৬৫ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৪১ শতাংশ বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি

সংবাদ সম্মেলনে রোলিন্স বলেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়াতে অন্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তবে কোন অঞ্চলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে, তা তিনি উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের মুরগির সংখ্যা পুনরায় বৃদ্ধি পাবে এবং ডিম উৎপাদন আবার পূর্ণমাত্রায় ফিরে আসবে, তখন আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ ডিমের উৎপাদনের দিকে ফিরে যাব এবং ডিম বাজারে সহজলভ্য হবে।’

এএফপির সংবাদ প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি বলেছে, গত শুক্রবার ডিম আমদানির বিষয়ে পোল্যান্ড ও লিথুনিয়ার পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মার্কিন দূতাবাস।

পোল্যান্ডের পোলট্রি ও ফিড প্রযোজক চেম্বারের পরিচালক কাটারজিনা গাভরোন্সকা এএফপিকে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়ারসোর মার্কিন দূতাবাস আমাদের সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছিল যে পোল্যান্ড মার্কিন বাজারে ডিম রপ্তানি করতে আগ্রহী কি না।’

ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য ১০০ কোটি ডলারের (১ বিলিয়ন ডলার) একটি পাঁচ দফা পরিকল্পনা করে, যার মধ্যে ৫০ কোটি ডলার বায়োসিকিউরিটি; প্রায় ১০ কোটি ডলার ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়নে এবং ৪০ কোটি ডলার কৃষকদের আর্থিক সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ডিম উৎপাদনে খামারগুলোকে বিনা মূল্যে পরামর্শ, বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ ও এই খাতে ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ ব্যয় করা হবে।

এই মাসের শুরুতে মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ডিমের উচ্চ মূল্যের জন্য তার পূর্বসূরি জো বাইডেনকে দায়ী। তিনি বলেন, ‘জো বাইডেনের পদক্ষেপ ডিমের দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। দাম কমানোর জন্য আমরা এখন কঠোর পরিশ্রম করছি।’

বাইডেন প্রশাসন গত বছর বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে লাখ লাখ ডিম উৎপাদনকারী মুরগি মারার নির্দেশ দিয়েছিল। তার পর থেকেই ডিমের দাম বাড়তে শুরু করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ম আমদ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ