জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অন–ক্যাম্পাস মাস্টার্সে ভর্তিতে আবেদন শুরু, ফি ৫০০, ফেলোশিপসহ নানা সুযোগ
Published: 24th, March 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অন–ক্যাম্পাসে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তি আবেদন আজ সোমবার (২৪ মার্চ) শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফি ৫০০ টাকা। নির্ধারিত সময়ের পর কোনোক্রমেই আবেদন গ্রহণ করা হবে। অসম্পূর্ণ আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। এ অন-ক্যাম্পাস প্রোগ্রামে ফেলোশিপের সুযোগও আছে। এ প্রোগ্রামের মেয়াদ ১ বছর যা ৬ মাস মেয়াদের ২ সেমিস্টারে চলবে।
অন ক্যাম্পাসে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তি আবেদন চলবে ৪ মে পর্যন্ত। ভর্তি–ইচ্ছুকরা সোনালী সেবার টাকা জমা দিতে পারবেন ২৫ মার্চ থেকে। ভর্তি পরীক্ষা ১৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষা ফল ২২ মে প্রকাশ করা হবে। মৌখিক পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে ২৬ মে থেকে ১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষা শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩ জুন। ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই থেকে।
আরও পড়ুনআইডিবি দেবে ৭২০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ, মিলবে হাতখরচের অর্থ২৩ মার্চ ২০২৫মাস্টার্সের ভর্তির বিষয়গুলো হলো—আর্টস গ্রুপ: বাংলা, ইতিহাস, ইসলামিক স্টাডিজ, ইংরেজি
সোশ্যাল সায়েন্স গ্রুপ: সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান
ন্যাচারাল সায়েন্স গ্রুপ: রসায়ন, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার সায়েন্স, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান
লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স গ্রুপ: প্রাণিবিজ্ঞান, ভূগোল, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি
বিজনেস স্টাডিজ গ্রুপ: একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, মার্কেটিং, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
ভর্তিতে আবেদনের যোগ্যতা—ক.
এক বছর মেয়াদি মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। এ প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ শিক্ষা বছর অর্থাৎ ২০১৮ থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ৩ বছর মেয়াদি ডিগ্রি (পাস) প্রোগ্রামে ডিগ্রি গ্রহণকারী শিক্ষার্থীগণের মধ্যে যাঁরা ১ বছরের মাস্টার্স (প্রিলি) সম্পন্ন করেছেন, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। সমমানের পরীক্ষায় পাস করা দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মকানুন ও শর্ত অনুযায়ী পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হতে পারবেন।
খ.
স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সিজিপিএ ২.৫০ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এ ভর্তি কার্যক্রমে আবেদন করতে পারবেন। স্নাতক (পাস) ও প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স পরীক্ষায় পৃথকভাবে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সিজিপিএ ২.৫০ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরাও এ ভর্তি কার্যক্রমে আবেদন করতে পারবেন।
গ.
ভাষাবিজ্ঞান, ফোকলোর ও নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও বাংলা বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ঘ.
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও ইতিহাস বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ঙ.
নৃ-বিজ্ঞান/সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
চ.
গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আবেদনকারীর খাদ্য ও পুষ্টি/ গার্হস্থ্য অর্থনীতি/সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্টারপ্রেনিউরশিপ/শিশুবিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক/ শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা/বস্ত্রপরিচ্ছেদ ও বয়নশিল্প বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ছ.
ফলিত রসায়ন/প্রাণ রসায়ন বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও রসায়ন বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
জ.
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং/ECE/EEE বিষয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরাও কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ঝ.
বিজনেস স্টাডিজ গ্রুপের ক্ষেত্রে আবেদনকারীরাও তাদের স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ের মেজর বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিলে ১৫০০০ এবং পিএইচডিতে ২০০০০, আবেদনের সময় আরও বৃদ্ধি২৩ মার্চ ২০২৫ফেলোশিপ–সংক্রান্ত তথ্যাদি ও শর্ত—মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় ৪ স্কেলে জিপিএ ৩.৮০ পাবেন, তাঁদের প্রত্যেককে মাসিক নির্ধারিত হারে ১ বছরের জন্য বৃত্তি প্রদান করা হবে। উল্লেখ্য, মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রামে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নীতিমালা অনুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর এওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
*বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন
আরও পড়ুনহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্পায়ার লিডারস প্রোগ্রাম, আইইএলটিএস ছাড়াই আবেদন ১৭ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ট র স ফ ইন ল প র গ র ম অন ক য ম প স পর ক ষ য বছর ম য প রব ন র পর ক রস য ন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বপ্নে হলো দেখা
কারও স্বপ্নে আপনি প্রবেশ করেছেন বা অন্য কেউ আপনার স্বপ্নে এসেছেন, তাও তখন, যখন আপনি স্বপ্নে নিজের ইচ্ছায় পরিচালিত হচ্ছেন– এমনটা কি কখনও ভেবেছেন? বিজ্ঞানীদের দাবি– একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে এমনটিই করেছেন তারা, যেখানে দু’জন মানুষের মধ্যে স্বপ্নের ভেতরে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। এমনটি সত্যি হয়ে থাকলে এটিই হবে প্রথমবারের মতো ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখার সময় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ– যা এখনও বিজ্ঞানের কাছে এক রহস্য।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক নিউরোটেক কোম্পানি রেমস্পেস, যারা মূলত লুসিড ড্রিমিং (স্বপ্নের মধ্যে সচেতন থাকা) ও ঘুমের বিকাশ নিয়ে কাজ করে। তারা জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দু’বার দু’জন ব্যক্তিকে লুসিড ড্রিমে প্রবেশ করিয়ে একটি সাধারণ বার্তা আদান-প্রদান করাতে পেরেছে।
কল্পকাহিনির মতো এক স্বপ্নপরীক্ষা
রেমস্পেসের গবেষকরা দাবি করেন, তারা এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করেছেন; যার মাধ্যমে দু’জন ব্যক্তি লুসিড ড্রিম অবস্থায় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছেন। স্বপ্ন এখনও মানবতার জন্য এক বিশাল রহস্য। ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্কে বিভিন্ন উজ্জ্বল ভাবনা, দৃশ্য, অনুভূতি ও কল্পনা গঠিত হয়। আমরা প্রায় সবাই স্বপ্ন দেখি, যদিও ঘুম ভাঙার পর তা মনে থাকে না। বিজ্ঞানীরা বলেন, স্বপ্নের মাধ্যমে মস্তিষ্ক আমাদের অনুভূতি ও চিন্তা প্রক্রিয়া করে, স্মৃতি দর্শন করে এবং বাস্তব জীবনে এর প্রস্তুতি নেয়।
স্বপ্নের মাধ্যমে যোগাযোগ
রেমস্পেসের দাবি, গত ২৪ সেপ্টেম্বর, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা নিজ নিজ বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন, তখন রেমস্পেসের তৈরি বিশেষ যন্ত্র ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে দূর থেকে তাদের মস্তিষ্কের তরঙ্গ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, হৃদস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাস রেকর্ড করে। যখন তাদের সার্ভার শনাক্ত করে যে, একজন অংশগ্রহণকারী লুসিড ড্রিমে প্রবেশ করেছে, তখন তারা একটি র্যানডম শব্দ তৈরি করে সেটি কানে দেওয়া ইয়ারবাডের মাধ্যমে তাকে শুনিয়ে দেয়। কোম্পানি শব্দটি প্রকাশ করেনি– এটি শুধু ওই ব্যক্তি জানতেন এবং স্বপ্নে পুনরায় উচ্চারণ করেন বলে দাবি করা হয়েছে। এরপর সেই প্রতিক্রিয়া সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়। আট মিনিট পরে, দ্বিতীয় অংশগ্রহণকারী লুসিড ড্রিমে প্রবেশ করলে, সার্ভার থেকে তাঁকে সেই রেকর্ডকৃত বার্তা পাঠানো হয়, যা তিনি ঘুম থেকে উঠে বলেন এভাবেই স্বপ্নে প্রথমবারের মতো একটি ‘যোগাযোগ’ সম্পন্ন হয়। রেমস্পেস জানায়, ‘আমরা একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছি, এতে লুসিড ড্রিমের মাধ্যমে মানবযোগাযোগ ও সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।’
লুসিড ড্রিম কী?
লুসিড ড্রিম তখন হয়, যখন কোনো ব্যক্তি স্বপ্ন দেখার সময় সচেতন থাকেন যে, তিনি স্বপ্ন দেখছেন। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানায়, এটি সাধারণত ঘুমের ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট’ ধাপে ঘটে, যেখানে সবচেয়ে প্রাণবন্ত স্বপ্ন দেখা যায়। এ অবস্থায় মানুষ নিজের ইচ্ছেমতো স্বপ্নে কাজ করতে পারেন, পরিকল্পিতভাবে কিছু করতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল চৌধুরী বলেন, ‘যে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো– যে তথ্যগুলো পাওয়া যাচ্ছে, তা কতটা নির্ভরযোগ্য। অর্থাৎ, এই গবেষণা অন্য কেউ অন্য কোনো জায়গায় করলে একই ফল দেবে কিনা। ঘুমের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টা নিশ্চিত হতে আরও গবেষণার দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মোটা দাগে ঘুমের দুইটা ভাগ আছে– এক. ননরেম ঘুম, যখন আমাদের চোখের মণি নড়ে না; দুই. রেম ঘুম, এ পর্বে আমাদের চোখের মণি নড়াচড়া করে। এ সময়ে মানুষ স্বপ্ন দেখে। এই স্বপ্নও দুই রকমের। লুসিড ড্রিম; যে স্বপ্নগুলো একদম বাস্তবের মতো জলজ্যান্ত। এমন এক স্বপ্ন যা দেখার পর ঘুম থেকে উঠে মনে হবে আসলেই এমনটি ঘটেছে, এটি বাস্তব। আরেকটি স্বপ্ন হলো নন লুসিড ড্রিম। এ স্বপ্নগুলো অবাস্তব। ঘুম ভাঙার পর বেশির ভাগ সময়েই আমরা স্বপ্নের কথা মনে করতে পারি না। লুসিড ড্রিমের ক্ষেত্রে আমরা তা মনে রাখতে পারি।’
প্রথম পরীক্ষার সাফল্যের পর, রেমস্পেসের সিইও মাইকেল রাদুগা (৪০) দাবি করেন, গত ৮ অক্টোবর আরও দু’জনের সঙ্গে একই ধরনের যোগাযোগ সম্ভব হয়। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আগে স্বপ্নে যোগাযোগ ছিল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, আগামী দিনে এটা এতটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে যে, আমাদের জীবনে এটি ছাড়া কল্পনাই করা যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, র্যাপিড আই মুভমেন্ট বা আরইএম ঘুম এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়, লুসিড ড্রিম আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পর বড় শিল্প হতে যাচ্ছে।’
যদিও রেমস্পেস এখনও জানায়নি তাদের প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে, তবে তারা সম্প্রতি ফেসবুকে জানিয়েছে, ‘লুসিড ড্রিমে যোগাযোগ’ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রস্তুত হয়েছে এবং তা একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে পর্যালোচনার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে– প্রকাশ হতে সময় লাগবে দুই থেকে ছয় মাস। তবে এখনও এই প্রযুক্তির কোনো বাহ্যিক বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা হয়নি এবং অন্য কেউ এ পরীক্ষা পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি।
রাদুগা যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম আমেরিকান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে বলেছেন, তাঁর প্রত্যাশা– এ ধরনের প্রযুক্তি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মোবাইল ফোনের মতো সাধারণ হয়ে যাবে। ‘মানুষ নিজেদের জীবন এসব ছাড়া কল্পনা করতে পারবে না, কারণ এটি তাদের জীবনকে আরও উজ্জ্বল, আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলবে। এটি মানুষের জীবনমান এমনভাবে বাড়িয়ে দেবে যে, তারা এটি ছাড়া নিজেদের কল্পনাই করতে পারবে না। আমাদের শুধু এগুলো উন্নত করতে হবে– এটি শুধু সময়ের ব্যাপার।’
২০০৭ সালে রাশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় রেমস্পেস এবং ছয় মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হয়, এখন লুসিড ড্রিমিংয়ে অভিজ্ঞ বা আগ্রহী নতুন অংশগ্রহণকারীদের খুঁজছে।
স্বপ্ন-যোগাযোগের ভবিষ্যৎ
ঘুমের মধ্যে মানুষের যোগাযোগ একসময়ে নিছক কল্পবিজ্ঞান মনে হতো। এখন বিজ্ঞান এটিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কল্পনা করুন– হাতের ফোনে মেসেজ না পাঠিয়ে, সরাসরি কারও স্বপ্নে ঢুকে তাঁর সঙ্গে ঘুমের মধ্যে সময় কাটানো, কথা বলা যাচ্ছে।
এই ভাবনা যেন স্বপ্নের মতো। ইতোমধ্যে কিছু কোম্পানি মানুষের চেতনা একটি বিকল্প পরিবেশে স্থানান্তরের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। একবার তা সফল হলে, সম্ভাবনার কোনো শেষ থাকবে না– মানবসভ্যতার বিবর্তন নতুন ধাপে প্রবেশ করবে।
লুসিড ড্রিমের মাধ্যমে নানারকম প্রয়োগ সম্ভব– শরীরগত সমস্যা সমাধান থেকে শুরু করে দক্ষতা অর্জন পর্যন্ত। আগের এক গবেষণায় রেমস্পেস দেখিয়েছে, মুখের পেশিতে সূক্ষ্ম সাড়া থেকে স্বপ্নে উচ্চারিত শব্দ শনাক্ত করা সম্ভব। এখান থেকেই ‘রেমিও’ নামে এক স্বপ্ন-ভাষার জন্ম, যা সেন্সরের মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়।
লুসিড ড্রিমে যে র্যানডম শব্দ শোনানো হয় অংশগ্রহণকারীদের, সেখানে ‘রেমিও’ স্বপ্ন-ভাষা ব্যবহার করা হয়। রেমস্পেস জানায়, এই সাফল্য এসেছে পাঁচ বছরের গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের পর। গবেষকরা প্রথম পরীক্ষার পর থেকে প্রতিটি পর্যায়ে প্রযুক্তি আরও উন্নত করেছেন। এবার তাদের লক্ষ্য আরও বড়– লুসিড ড্রিমে রিয়েল-টাইম যোগাযোগ। যদিও এটি অনেক জটিল, গবেষকদের আশা, আগামী কয়েক মাসেই তারা সফল হবেন।
শেষ কথা
যেখানে স্বপ্নে যোগাযোগ এতদিন ছিল সায়েন্স ফিকশন সিনেমা বা উপন্যাসের বিষয়; এই পরীক্ষা সেটিকে বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যদি অন্যান্য বিজ্ঞানী ও প্রতিষ্ঠান একে যাচাই করে, তবে এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ধরনই বদলে দিতে পারে– যেখানে ঘুমের মাঝেও আমরা অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পারব। এখনই অতি উত্তেজিত না হয়ে সতর্ক আশাবাদী হওয়াই ভালো– প্রযুক্তিটির সাফল্য এখনও গবেষণাগারে পর্যালোচনার অপেক্ষায়; তাতেও একে পুরোপুরি বাস্তব করতে দশককাল লেগে যেতে পারে। v