হামজার অভিষেক জয়ে রাঙাতে চায় বাংলাদেশ
Published: 25th, March 2025 GMT
শিলং শহরের প্রাণকেন্দ্রে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে গিয়ে খানিকটা অবাকই হতো হলো। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি এত সুন্দর! লাল-হলুদ গ্যালারি, সবুজ মাঠে চলছে ঘাস কাটা। বাইরের চারপাশ ঝাড়ামোছায় ব্যস্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। আবাসিক এলাকার মধ্যেই নির্মিত এই স্টেডিয়াম সেজেগুজে অপেক্ষায় রয়েছে আজ বাংলাদেশ-ভারত দুই দলকে স্বাগত জানাতে।
স্থানীয় দর্শকেরা অবশ্য স্বাগত জানাবেন না বাংলাদেশ দলকে। স্বাভাবিকভাবে স্বাগতিক ভারতের দিকেই থাকবে শিলংবাসীর যাবতীয় সমর্থন। সেই প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশকে খেলতে হবে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ।
যে ম্যাচে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামতে চলেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফুটবলার হামজা চৌধুরী। কিছুদিন ধরে তাঁকে নিয়ে আলোচনাটা বাংলাদেশ ছাপিয়ে চলে গেছে এশিয়ার ফুটবলেই। হামজার উত্তর হিসেবে ভারতীয় দলেও থাকছেন কিংবদন্তি স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রী।
লড়াইটা অবশ্য দুই স্প্যানিশ কোচেরও। একদিকে বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, অন্যদিকে ভারতের কোচ মানোলো মার্কেজ। তাঁদের দেখানো ট্যাকটিকসের ওপর ম্যাচভাগ্য ঝুলে থাকবে অনেকটাই। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু এই ম্যাচটা তপু-তারিক কাজীদের জন্য বরাবরের মতোই একটু আলাদাই। হামজা আছেন বলেই শুধু নয়, প্রতিপক্ষ ভারত মানেই তো মর্যাদার লড়াই।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ–ভারত ম্যাচ কখন, কোথায় দেখবেন২ ঘণ্টা আগেএই ম্যাচে বাংলাদেশকে জেতাতে মরিয়া হামজা। তাঁর মানের ফুটবলার এশিয়ার ৮০ শতাংশ জাতীয় দলেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ তাই ভাগ্যবান, হামজাকে নিয়ে মাঠে নামতে পারছে আজ। প্রথাগত রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হলেও তাঁকে মাঝমাঠে বা স্ট্রাইকারের পেছনে খেলাতে পারেন কোচ। সেখানেই হামজা খেলুন, আজ তিনিই বড় শক্তি বাংলাদেশের।
ইংল্যান্ড থেকে ১৭ মার্চ হামজা সপরিবার বাংলাদেশে আসেন। তাঁকে নিয়ে হওয়া উন্মাদনাটা মূলত আজকের ভারত ম্যাচ সামনে রেখেই। শিলংয়ে গত কয়েক দিনে অনুশীলন ভেন্যু নিয়ে নানা টানাপোড়েন, ঘাসের মাঠের ম্যাচের আগে টার্ফে অনুশীলন করতে বাধ্য হওয়া—সব ভুলে আজ বাংলাদেশ পাখির চোখ করছে জয়কেই। ভারতকে সর্বশেষ বাংলাদেশ হারাতে পেরেছিল ২৩ বছর আগে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। দীর্ঘ খরা কাটিয়ে আজ জয় দিয়েই হামজার অভিষেক রাঙাতে চায় বাংলাদেশ।
শিলংয়ে অনুশীলনের একটা মুহূর্তে তপু বর্মণের আড়ালে হামজা চৌধুরী। ভারত ম্যাচে তিনি সবাইকে আড়াল করবেন, এটাই প্রত্যাশা বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’