২০১৩ সালে গেজি পার্কের আন্দোলনের পর এত বড় বিক্ষোভ তুরস্ক দেখেনি। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের পর তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মূলত অবস্থান বিক্ষোভের মাধ্যমে প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত করছেন। কোথাও আইন ভাঙেননি তাঁরা। আন্দোলন সহিংসও হয়নি। কিন্তু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গতকাল সোমবার এ আন্দোলনকে ‘সহিংস’ আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছেন। দ্রুত বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এ আন্দোলন মানুষকে উসকানি দিচ্ছে।

গতকালই ইমামোগলুর দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিপিএইচ) তরফে জানানো হয়েছে, তাঁকেই ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।

এরদোয়ানের বক্তব্য

গতকাল এরদোয়ান বলেছেন, ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ঘিরে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তা সহিংস চেহারা নিয়েছে। সিপিএইচ দলকে সতর্ক করে এরদোয়ান বলেছেন, প্রশাসনের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে দেবেন না। তার আগেই এই বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হোক। প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, সিপিএইচ মানুষকে উত্তেজিত করে তুলছে।

এরদোয়ানের অভিযোগ, এ আন্দোলনের জেরে পুলিশ কর্মীরা আহত হয়েছেন। দোকানের কাচ ভেঙেছে। বেশ কিছু সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। এই সবকিছুর উত্তর চাওয়া হবে সিপিএইচের কাছে। পার্লামেন্টে রাজনৈতিক উত্তর দিতে হবে তাদের। আর আদালতে আইনি লড়াই লড়তে হবে।

এরদোয়ানের এ বক্তব্যের পরও বিক্ষোভ-আন্দোলনে ভাটা পড়েনি। গতকাল দেশজুড়ে এ আন্দোলন ষষ্ঠ দিনে পড়েছে।

ইমামোগলুর পোস্ট

কারাগারে বসেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করে যাচ্ছেন ইস্তাম্বুল নগরের মেয়র ইমামোগলু। জনগণকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, কেউ যেন কোনো উসকানিতে পা না দেন। পুলিশের সঙ্গে যেন কেউ সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়েন। তিনি লিখেছেন, ‘সাধ্যের বেশি চেষ্টা করছি এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে।’

জার্মানির বক্তব্য

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের মুখপাত্র গতকাল জানিয়েছেন, ইস্তাম্বুলের মেয়রের গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় তাঁকে হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কেন এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা দ্রুত জানাতে হবে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তুরস্কে যা ঘটছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। এ ঘটনা তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে বলেও জানিয়েছে জার্মানি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প এইচ এরদ য় ন ত রস ক গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

শনি গ্রহের একাধিক চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের সন্ধান

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনি গ্রহের আটটি মাঝারি আকারের চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড শনাক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে মিমাস, এনসেলাডাস, ডায়োন, টেথিস, রিয়া, হাইপেরিয়ন, লাপেটাস ও ফিবি নামের চাঁদগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের তথ্য টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি চাঁদগুলোর ওপরে নিয়মিত নজরও রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডায়োন ও রিয়া চাঁদে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড শনির প্রধান বলয়ের বরফের অনুরূপ। ফিবি চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। লাপেটাস ও হাইপেরিয়নের অন্ধকার অঞ্চলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দেখা যায়। বরফযুক্ত এসব চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও তাঁর সহকর্মীরা এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, কঠিন কার্বন ডাই–অক্সাইড সৌরজগতের প্রান্তসীমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। যদিও সেই অবস্থানে কার্বন ডাই–অক্সাইড স্থিতিশীল নয়। আমরা শনির উপগ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থান জানার মাধ্যমে ভিন্ন পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন গ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইড কীভাবে আটকে আছে, তা জানার সুযোগ আছে এখানে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির চাঁদে আটকে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড থেকে আদর্শ ল্যাবের মতো তথ্য পাওয়া যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদে কমপক্ষে দুটি পৃথক উৎস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ