জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন মোট ৯৬.৬৭ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে
Published: 28th, March 2025 GMT
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত মোট ৯৬ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। ৬ হাজার ৩৪১ ব্যক্তি-পরিবার এই সহায়তা পেয়েছে।
আজ শুক্রবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, গত বছরে ১০ সেপ্টেম্বর ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুর দিন থেকে আজ পর্যন্ত ৭৪৫ জন শহীদ পরিবারকে ৩৭ দশমিক ২৫ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ হাজার ৫৯৬ জনকে ৫৯ দশমিক ৪১ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আইনি জটিলতার কারণে ১০০ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বলেন, ‘আহত যোদ্ধাদের পাশে বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি কর্মসূচির গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসনসহ যাবতীয় সহায়তার কাজ করা হবে।
শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তার পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধরে রাখতে ফাউন্ডেশন কাজ করছে বলে জানান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে একটি অধিদপ্তর গঠন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাঁরা যতটুকু জানতে পেরেছেন, সেই অধিদপ্তরটির নাম ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’। এ অধিদপ্তরটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রত্যেক শহীদের পরিবারের কাছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শুভেচ্ছাসহ উপহার পাঠানো হয়েছে বলে জানান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
ফাউন্ডেশনের অর্থ সম্পাদক মোহা.
আহসান হাবীব চৌধুরী বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের অনেকে দীর্ঘ সময় একটা মানসিক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটা থেকে উত্তরণের জন্য তাঁরা মানসিক উন্নতি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা, বৈঠক করেছেন। তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে ফাউন্ডেশনের।
আহসান হাবীব চৌধুরী আরও বলেন, সরকার ফাউন্ডেশনে ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো পাওয়া গিয়েছিল। এই অর্থের বেশির ভাগ ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গেছে। তাঁরা ঈদের পর ফাউন্ডেশনের জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুদানের আবেদন জানাবেন।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী বলেন, প্রতিদিনই ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে অনেকে ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আসেন আহত সেজে। প্রতিদিনই এ রকম ভুয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে প্রকৃত যাঁরা আহত, তাঁদের নিয়ে কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। এই ভুয়া ইস্যু এখন ফাউন্ডেশনের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁরা যে টাকাটা দিচ্ছেন অনুদান হিসেবে, তা মানুষের আমানতের টাকা। তাঁরা কোনোভাবেই চান না এই টাকা কোনো প্রতারকের হাতে যাক।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল