কোনো দল যদি মজলুম থেকে জালিমে রূপান্তর হতে চায়, তাদেরও আওয়ামী লীগের মতোই পরাজিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন (শিশির)। শুক্রবার ইফতারের আগে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে এ মন্তব্য করেন।

লালমাই উপজেলা এনসিপির ব্যানারে ‘গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি’তে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিগত দিনে শুনেছি, কুমিল্লা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি। কিন্তু আমরা বলতে চাই, কুমিল্লায় যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানেই গণধোলাই। আওয়ামী লীগকে যেখানে পাবেন, সেখানে গণধোলাই দিয়ে জেলে ভরে দেবেন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমাদের স্লোগান হলো—একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর।’

কেউ কেউ এখন জুলাই বিপ্লবকে অস্বীকার করতে চাইছে উল্লেখ করে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘তারা এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলছে না। তারা বলছে, এটা নাকি বিপ্লবই হয়নি। আপনারা আমাদের সহযোগী ছিলেন। এত দিন মজলুম ছিলেন। আপনারা যদি এখন মজলুম থেকে জালিমে রূপান্তর হতে চান, আমরা আপনাদের আওয়ামী লীগের মতোই পরাজিত করে ছাড়ব।’

জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, ‘জুলাইয়ের প্রত্যেক শহীদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করুন। সেকেন্ড রিপাবলিক (স্বাধীনতা) ঘোষণা করুন। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে অনেক ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এখনো খেলার চেষ্টা চলছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন একই সঙ্গে দিতে হবে। যদি এর ব্যতিক্রম হয় জুলাই আন্দোলনের মহানায়করা আবারও রাজপথে বুকের তাজা রক্ত দিতে নেমে আসবে।’

সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাফসা জাহান, এনসিপির ফজলে এলাহি, হুমায়ুন কবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আবু রায়হান, সদস্যসচিব মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান প্রমুখ।

ইফতার মাহফিল শেষে এনসিপির নেতারা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বাগমারা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে বাগমারা দক্ষিণ বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তাঁরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র ব গম র ইফত র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ