অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন এমন উপদেষ্টাদের অপসারণের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উচিত সেই সব উপদেষ্টার অপসারণ করা, যারা তার সরকারের নিরপেক্ষতা নষ্ট করছেন এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।’

আজ রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনের আগে সরকার নিরপেক্ষতা হারালে বিএনপি তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সরকারের পূর্ণ নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করি, বিশেষ করে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে। যদি তিনি অনুভব করেন যে তার মন্ত্রিসভার কেউ নিরপেক্ষতা নষ্ট করছেন, তবে তাদের অপসারণ করা উচিত। তাকে (ড.

ইউনূস) সম্পূর্ণ স্বচ্ছ থাকতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যদি প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হবে যে এ সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের হতাশ করেছে। কিছু উপদেষ্টার কার্যক্রম দেখে আমরা সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করছি।’

সরকারের কিছু উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থে সরকারি সম্পদ অপব্যবহার করছেন, যা নিরপেক্ষতার পরিপন্থি এবং এটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘সরকারি সম্পদ রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যা স্পষ্টভাবে নিরপেক্ষতার নীতির লঙ্ঘন।’

বিএনপির মহাসচিবের মতে, এসব কর্মকাণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এখনও একটি সুস্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ দেননি, যা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সহায়ক হতে পারত। একটি নির্ভরযোগ্য রোডম্যাপ থাকলে চলমান রাজনৈতিক সংকট প্রশমিত হতো এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনি প্রস্তুতিতে মনোযোগী হতে পারত।’

আরও পড়ুনযতটুকু শুনেছি, এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট র জন ত ক সরক র র ব এনপ করছ ন ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু এ বছরই: রুশ রাষ্ট্রদূত

চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ম্যান্টিতস্কি। রোববার রাশিয়া দিবস উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ বছর রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ের ৮০ বছর উদযাপন করছে। একইসঙ্গে সোভিয়েত পারমাণবিক শিল্প প্রতিষ্ঠারও ৮০ বছর। এই গৌরবময় সময়ে রূপপুর প্রকল্পের অগ্রগতি আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।’ তিনি জানান, রুশ ও বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের যৌথ প্রচেষ্টায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে এবং প্রথম ইউনিট উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুর প্রকল্প শুধু প্রযুক্তিগত নয়, রাশিয়া-বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা ‘রোসাটম’ এর সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক চালুর প্রস্তুতিতে রয়েছে।

উল্লেখ্য, রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে রাশিয়ার প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন রয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর অন্যতম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ