গণহত্যার বিচার বানচালে অর্থ বিনিয়োগের প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
Published: 3rd, April 2025 GMT
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার বানচাল করতে পতিত সরকারের মোটা অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা নেপথ্যের কুশীলবদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনই বিস্তারিত প্রকাশ করছি না। সময় হলে সবই জানানো হবে। তবে যত ষড়যন্ত্রই হোক, তা ব্যর্থ হবে এবং বিচার যথাযথভাবে হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমকালকে এসব কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা করে তারা স্ক্যান্ডলাইজড করবে ট্রাইব্যুনালকে। সেজন্য তারা ব্যাপক তৎপরতা নিয়ে মাঠে নামছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রসিকিউশন কিছু চিহ্নিত করেছে আরও কিছু চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। তাছাড়া এখন মামলা তদন্ত পর্যায়ে, আমরা চিন্তা করছি কীভাবে তাদের ধরা যায়, অবশ্যই যারা জড়িত থাকবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগের দিন বুধবার তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার খসড়া তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন কার্যালয়ে জমা হয়েছে এবং শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, খসড়া প্রতিবেদনে গণহত্যায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার স্পষ্ট নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। ওই প্রতিবেদনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গণহত্যার চালানোর অজস্র প্রমাণ উঠে এসেছে। শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিগত ১৫ বছরে গুম ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষকে সাদা পোশাকে কিংবা পোশাকধারী বিভিন্ন বাহিনী এসে তুলে নিয়ে যেত। এরপর তারা আর কোনোদিন ফিরে আসতো না, অধিকাংশই ফিরে আসেনি। কেউ কেউ ফিরে আসলেও তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। আর কেউ স্বৈরশাসনের অবসানের পর ‘আয়নাঘর’ থেকে ফিরে এসেছেন। ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগ উপস্থাপনের পর গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণহত য র
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
ফিলিস্তিনের জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ফিলিস্তিন সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। তারা গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে দ্বি–রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
গাজা পুনর্গঠনে আরব দেশগুলোর পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্মকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান তিনি।
ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে নিউইয়র্কে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাই লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন।