ঈদের আয়োজনে বোনাস তো বটেই, মাসের রোজগারেরও একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যায় অনেকের। পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে কারও কারও হয়তো জমানো টাকাতেও হাত দিতে হয়েছে। খাবারদাবার, পোশাক, যাতায়াত, সবার জন্য উপহার কেনার মতো বহু খাতেই খরচ করা হয় ঈদের সময়। সাদাসিধে মধ্যবিত্ত সংসারে তাই ঈদের পরপরই খরচের লাগাম টেনে ধরতে হয়। এ মাসের প্রায় পুরোটাই তো বাকি। আকস্মিক বিপদের কথা মাথায় রেখে কিছুটা সঞ্চয় করাও প্রয়োজন। এ সময় সংসারের জন্য একটা বাজেট করে নেওয়া দারুণ ব্যাপার। তাহলে বাড়তি খরচ কমানো সহজ হয়। রোজকার যাতায়াত ও খাবারদাবারের জন্য যে খরচটা হয়, তা কমিয়ে আনার কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক। 

আরও পড়ুনখাবারের অপচয় ও ব্যয় কমাবেন যেভাবে১১ মার্চ ২০২৪খাবারদাবার

কম খরচে খাবারদাবারের আয়োজন প্রসঙ্গে বলছিলেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান

কম পদ রান্না করে কীভাবে পরিবারের সবার পুষ্টির চাহিদা মিটবে, তা নিয়ে ভাবুন। একই পদে নানা ধরনের উপকরণ যোগ করলে কম পদেই রান্নার ঝামেলা মিটে যাবে। তাতে খরচও কম হবে। মাছ-মাংস ছাড়াও কিন্তু নানা রকম ডাল, বীজ, শাকসবজি, বাদাম প্রভৃতি থেকে পুষ্টি পেয়ে যাবেন। তবে অন্তত শিশু, কিশোর-কিশোরী, অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মায়ের জন্য ডিম-দুধের ব্যবস্থা রাখতে চেষ্টা করুন; মাছ-মাংস রাখতে পারলেও ভালো। বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির শারীরিক সমস্যার কারণে বিশেষ ধরনের খাদ্যতালিকা মেনে চলতে হলে সেটির ব্যবস্থাও রাখুন।

অবশ্যই এমন পদ রান্না করুন, যাতে কম তেল প্রয়োজন হয়।

যা খাওয়া যায়, তা অপচয় করবেন না। লাউ বা মিষ্টিকুমড়ার মতো বিভিন্ন সবজির খোসা দিয়ে ভাজি বা ভর্তা করতে পারেন। তাতে সামান্য চিংড়ি যোগ করলে মুখরোচক হবে।

এমন পরিমাণে রান্না করুন, যেন রয়ে না যায়। তবু যদি খাবার রয়েই যায়, পরদিন তা যেকোনোভাবে কাজে লাগিয়ে ফেলুন। যেমন পাতলা খিচুড়ির মতো করা যায়। এতে শুকনা মরিচ বা পাঁচফোড়নের বাগার দিলে বাসি ভাবটা থাকবে না।

উৎসবের সময়ের কিছু খাদ্যপণ্য রয়ে যেতে পারে ঘরে। সেসব কাজে লাগান।

স্থানীয় কৃষকদের থেকে সরাসরি খাদ্যপণ্য কিনতে পারেন। খরচ কম পড়বে। গ্রামের বাড়ি থেকে কম দামে শাকসবজি কিনেও আনতে পারেন। বাসায় সবজি পরিষ্কার করে নিয়ে বড় টুকরা করে কেটে হালকা ভাপিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে অনেক দিন পর্যন্ত খাওয়া যায়। তবে তাতে কিছু ভিটামিন নষ্ট হবে। তাই এসব খাওয়ার সময় লেবু এবং কাঁচা সালাদও খাবেন। তাহলে পুষ্টির চাহিদা মিটবে।

আরও পড়ুনখরচ কমিয়ে ৭ দিনই যেভাবে পুষ্টিকর খাবার খাবেন০৬ নভেম্বর ২০২৪যাতায়াত

গণপরিবহনে যাতায়াত করুন। কিছু পথ হাঁটুন। রিকশায় যে পথ যেতে ৩০-৪০ টাকা খরচ হয়, সেই পথটুকুই না হয় হাঁটুন যাওয়া-আসার দুই সময়ে। এভাবে মাসে বেশ কিছু অর্থ সাশ্রয় হবে। শরীরও সুস্থ থাকবে। দূরের পথে যাতায়াতেও কিছু পথ হেঁটে এগোলে খরচ কমবে। বেশি দূরত্বের পথে এমন কাউকে সঙ্গী করে নিন, যিনি একই গন্তব্যে যাবেন। ভাগাভাগি করে ভাড়া মেটালে খরচ কম হবে। তবে খুব ভালোভাবে চেনেন, এমন মানুষের সঙ্গেই কেবল এই ভাগাভাগি করুন।

আরও পড়ুনখরচ কমাতে চান, কিন্তু সঙ্গী মানছেন না?০৪ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খরচ কম র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক রাতের বৃষ্টিতে ৪৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতভর বৃষ্টিতে পাকা-আধাপাকা ধান, ভুট্টা, শাকসবজির ক্ষেত ডুবে গেছে। এতে জেলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির আবাদি ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি অফিস।  

স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১০ বছরে একরাতে এমন বৃষ্টির রেকর্ড নেই।  

আরো পড়ুন:

তেঁতুলিয়ায় ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, মিলেছে শীতের আভাস

গাছ থেকে সাইনবোর্ড ও পেরেক তোলার অভিযান হিলি পৌরসভার

লঘুচাপের প্রভাবে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সারা দিন আকাশ মেঘলা ছিল। সন্ধ্যার পরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাত সাড়ে ৮টার পর জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হতে থাকে। 

জেলার বিদিরপুর এলাকার আমন ধান চাষি আমানউল্লাহ বলেন, ‘‘আমার দুই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি ডুবে গেছে। কয়েক দিন পরে ধান কাটা শুরু হতো। শেষ মুহূর্তে দুর্যোগের কবলে পড়ে অধিকাংশ ধান শেষ হয়ে গেছে।’’ একই এলাকার আরেক চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘‘আমরা কল্পনাও করিনি এই সময়ে এসে এত বৃষ্টি হবে।’’    

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২ হাজার ২৩৫ হেক্টর রোপা আমন ধান, ৩৭ হেক্টর আলু, ৯১৭ হেক্টর সরিষা, ৩১৬ হেক্টর শাকসবজি, ২৪৪ হেক্টর পেঁয়াজ, ২৫০ হেক্টর মাসকলাই, ৬৮ হেক্টর ভূট্টা, ১৩ হেক্টর স্ট্রবেরি এবং ৩৭৯ হেক্টর রসুন রয়েছে।’’  

তিনি আরো বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে পাকা ধান হেলে পড়েছে, সেগুলো কিছুটা ক্ষতি হবে। এর পাশাপাশি শাকসবজির কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।’’ 

তবে জমি থেকে পানি দ্রুত নেমে গেলে এবং আর বৃষ্টি না হলে ফসলের বেশি ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি। 

ঢাকা/শিয়াম/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক রাতের বৃষ্টিতে ৪৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে