ডিওজিইর দায়িত্ব ছাড়ার পরও ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন মাস্ক
Published: 3rd, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব ছাড়ার পরও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধু ও উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে যাবেন ইলন মাস্ক। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন এই ধনকুবের। আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ভ্যান্স।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এবং সম্প্রচারমাধ্যম এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের বলেছেন, মাস্ক শিগগিরই কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এখন তিনি তাঁর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে ফিরে যাবেন।
গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর সরকারি দক্ষতা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন ট্রাম্প। প্রাথমিকভাবে ১৩০ দিনের জন্য ওই বিভাগে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মাস্ককে। মে মাসের শেষের দিকে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে মেয়াদ শেষের আগেই মাস্ক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন কি না, তা পলিটিকো ও এবিসির প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি।
জেডি ভ্যান্স ফক্স নিউজকে বলেন, ‘ডিওজিইর করার মতো অনেক কাজ আছে। ইলন চলে যাওয়ার পরও এসব কাজ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমি ও প্রেসিডেন্ট—দুজনেরই বন্ধু এবং উপদেষ্টা হিসেবে থেকে যাচ্ছেন ইলন।’
পলিটিকোর প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মাস্কের চঞ্চল মনোভাবের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতর ও বাইরের অনেকে তাঁকে অপছন্দ করা শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হতে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ এই ধনীকে সম্পদের পরিবর্তে রাজনৈতিক দায় হিসেবে দেখতে শুরু করেন ট্রাম্পের দলের রাজনীতিবিদেরা।
আরও পড়ুনইলন মাস্ক শিগগির দায়িত্ব ছাড়ছেন, ঘনিষ্ঠদের বলেছেন ট্রাম্প২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।