সাংবাদিক রাফিয়া তামান্নাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেই ক্ষান্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা। এবার তারা নেমেছে অপপ্রচারে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ-পেজে দেওয়া হচ্ছে আপত্তিকর পোস্ট। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীতে ছোট ভাই, বন্ধুসহ হামলার শিকার হন রাফিয়া। তিনি বলেন, হামলায় জড়িতরা এবং তাদের সমমনারাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছি। জিডিও করব। 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অভিযানে প্রধান অভিযুক্ত সোয়েব রহমান জিশানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। অন্যরা হলো রাইসুল ইসলাম ও কাউসার হোসেন। জিশানের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ এবং কাওসারের বিরুদ্ধে বরিশালের কোতোয়ালি থানায় মামলা রয়েছে। জিশান ঘটনার সময় টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয় দেয়।

সাংবাদিক রাফিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনশ্রী ই-ব্লকের তিন নম্বর সড়কের একটি জুসের দোকানে সেদিন তাঁর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেখান থেকে বের হওয়ার পর আরও দু’জন এসে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা রাফিয়া ও তাঁর ভাই এবং রাফিয়ার বন্ধুকে মারধর করে। এ সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন রাফিয়া। এ ঘটনায় তিনি রামপুরা থানায় মামলা করেন। সেখানে জিশানের নাম উল্লেখ এবং বাকিদের অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

রাফিয়া সমকালকে বলেন, আমাদের রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। হেনস্তাকারীদের কিশোর গ্যাং মনে হয়েছে। উত্ত্যক্তের সময় দু-তিনজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতেই ওরা মুহূর্তে ১০-১২ জনকে ডেকে নেয়। এর পর এ ঘটনা নিয়ে আর কথা না বলতে চাপ দেওয়া হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় ফেসবুকে আজেবাজে কথা লিখে মানহানির চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাফিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে বনশ্রীবাসী গ্রুপে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন জাপানি গাড়ি বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট মুনতাসাম হোসাইন। নিজের প্রোফাইলেও একাধিক পোস্ট দিয়েছেন তিনি। আরেকটি গ্রুপের সদস্য আসিক মাহমুদসহ কয়েকজন দিয়েছেন কুরুচিপূর্ণ পোস্ট। 

সরেজমিন এই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক তথ্য পাওয়া যায়নি। শাহী জুস কর্নারে ঘটনার সূত্রপাত। সেই দোকানের কর্মী মো.

লিটন জানান, নারী সাংবাদিকের দিকে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তির তাকানো নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার শুরু হয়। পরে সাংবাদিক দোকান থেকে বের হয়ে যান। মারধরের ঘটনা ঘটে রাস্তায়।

ঘটনাস্থলের ফুচকা বিক্রেতা কুবির ইসলাম জানান, দুই যুবক নারী সাংবাদিকের ভাইকে মারধর করছিলেন। তখন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন সাংবাদিক। 

মামলার এজাহারে রাফিয়া লিখেছেন, ‘এক লোক বারবার তাকাচ্ছিল দেখে জানতে চাই, চেনেন কিনা। এ কথা শুনে উনি উত্তেজিত হন। পরে হামলার ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়।’ 

র‍্যাব-৩-এর স্টাফ অফিসার (গণমাধ্যম) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া জানান, জিশানকে মেরাদিয়া থেকে, বেইলি রোড থেকে রাইসুল এবং গেণ্ডারিয়া থেকে কাউসারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ