মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক বলবৎ থাকলে তৈরি পোশাকের কিছু ক্রয়াদেশ ভারত ও পাকিস্তানে চলে যাবে। শুল্ক কম থাকায় এ দেশগুলোয় হেভি জার্সি, ডেনিম প্যান্ট, হোম টেক্সটাইলের মতো ক্রয়াদেশ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বাড়বে। এতে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। অন্যান্য দেশেও পাল্টা শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ফলে সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে। সেটি হলে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ কমবে। প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সরকারের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক পর্যালোচনা করা। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর পরিমাণে তুলা আমদানি করি। প্রয়োজনে আমরা আন্তর্জাতিক কটন কাউন্সিলকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর–কষাকষি করতে পারি। আমরা তাদের বলতে পারি, তোমাদের তুলা আমরা ব্যবহার করব। এর বিপরীতে তোমরা শুল্ক কমাও। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে গুদাম স্থাপনের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। যাতে তারা দ্রুত বাংলাদেশের কারখানাগুলোকে তুলা সরবরাহ করতে পারে।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের কারণে মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন তৈরি পোশাকের দাম কমাতে আমাদের ওপর চাপ দেবে। পোশাকের রপ্তানি মূল্য কমে গেলে সে ক্ষেত্রে এ খাতের শিল্পমালিকদের রপ্তানি প্রণোদনা হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। এতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কোনো বাধা নেই। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া হিসেবে এরই মধ্যে পোশাক রপ্তানিসহ বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি ধরে রাখতে হলে নগদ সহায়তা বাড়াতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, রপ্তানির সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানও জড়িত। এ কারণে খাতটি যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে সরকারকে তাদের কর্মকৌশল ঠিক করে এ নিয়ে দর–কষাকষি শুরু করতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। তাই দেশটি পাল্টা শুল্ক আরোপের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা দরকার।
আনোয়ার–উল–আলম চৌধুরী
সভাপতি, বাংলাদেশ চেম্বার
সাবেক সভাপতি, বিজিএমইএ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা