বরগুনার আমতলীতে পলি বেগম (৪৫) নামে এক নারীর হাত কুপিয়ে কেটে দিয়েছেন তার স্বামী সাইদ মৃধা (৫৫)। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থান কুপিয়ে জখম করা হয়।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর দুইটায় পলি বেগমকে উদ্ধার করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এর আগে দুপুরে হলুদিয়া দক্ষিণ টেপুরা গ্রামের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইদ প্রায় পাঁচ বছর আগে দ্বিতীয় বিবাহ করেন এবং নেশাগ্রস্ত ছিলেন। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই তার বাকবিতণ্ডা হতো। শুক্রবার দুপুর বারোটার দিকে পলি রান্না করতে গেলে সাইদ তাকে রান্না করতে দিবে না বলে কুপিয়ে ডান হাতের কনুইয়ের উপর পর্যন্ত কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থান কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে প্রেরণ করে।
আহত অবস্থায় পলি বেগম বলেন, “গতকালও আমাকে আমার স্বামী মারধর করেছে। আজ বাড়িতে এসে আমাকে গালমন্দ করলে আমি শুধু বলি তুমি কি নেশা করে এসেছ? এরপর সে আমাকে কোপানো শুরু করে। এসময় বাড়িতে আমার চাচাতো দেবররা ছিল, তারা বাধাও দিয়েছিল। কিন্তু সে কোন কিছু মানেনি।”
পলি বেগমের বোনের মেয়ে ফাতেমা বলেন, “আমার মেঝ খালু সাইদ নেশাগ্রস্ত। সে প্রায়ই আমার খালাকে মারধর করে। আমরা তাকে রিহাবে দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তার ভাই বোনেরা কেউ শোনেনি। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আজ আমার খালার হাত কেটে ফেলা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”
আমতলী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস