বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে দুই দিনের থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানান ‘প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট রাত ১০টা ৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।’
ব্যাংককে সংক্ষিপ্ত সফরের সময় অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি বিমসটেক ইয়ং জেনারেশন ফোরামেও বক্তব্য দেন। তিনি শুক্রবার বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিয়ে সদস্য দেশগুলোকে পারস্পরিক স্বার্থ এবং ভাগাভাগি করে লাভবান হওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার কাছ থেকে আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের সভাপতিত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
এছাড়াও অধ্যাপক ইউনূস শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং টোবগে, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হারিনি আমারাসুরিয়া এবং বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্রা মণি পান্ডের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
থাইল্যান্ডের সামাজিক উন্নয়ন ও মানব সুরক্ষামন্ত্রী (এমএসডিএইচএস) ভারাউত শিলপা-আর্চা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংযুক্ত থাইল্যান্ডের মন্ত্রী জিরাপর্ন সিন্ধুপ্রাই অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক যান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক রব র
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব