অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে ২৮ জনের কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তাদের পাসপোর্ট নিয়েও ফেরত দেয়নি দালাল চক্র। গতকাল শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রহিম মুকুল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর আগে রহিজ উদ্দিন কাপালী, ছাবাস উদ্দিন কাপালী, সালমা বেগম, শাহ আলম, বাবুল কাপালী ও সিয়াম মিলে অস্ট্রেলিয়া লোক পাঠিয়ে উচ্চ বেতনের চাকরির লোভ দেখায়। পরে কয়েক দফায় ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা নেয় তারা। এ সময় পাসপোর্টও নেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাসপোর্ট ও টাকা ফেরত দেয়নি।

আব্দুর রহিম মুকুলের ভাষ্য, অনেকেই দালাল চক্রের কাছে সর্বস্ব দিয়েছেন। একাধিকবার পাসপোর্ট ও টাকা চেয়েও ফেরত পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গত ১৫ মার্চ টাঙ্গাইল সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত অভিযোগটি আমলে নেয়নি। চালাল চক্রের হোতা রহিজ উদ্দিন কাপালী সপরিবারে পলাতক। তাঁর অভিযোগ, এই দালাল চক্র বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। চক্রটি যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারে সে ব্যাপারে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দ্রুত টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা চান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী এসএম মহিউদ্দিন বাদল, এসএম আশরাফুল হক কনক, অপূর্ব হোসেন, সেলিম রেজা, মাছুম, আকন্দ প্রমুখ। 

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে দালাল চক্রের হোতা রহিজ উদ্দিন কাপালীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল সদর থানার উপপরিদর্শক শান্ত দেব জানান, অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে নথিপত্র দেওয়ার কথা ছিল, পরে তা আর দেননি। তবুও অভিযোগটির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ