পবিত্র রমজান মাসে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে বড় পরিবর্তন ঘটে। শরীর ক্রমেই এ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। এরপর আসে ঈদ। ঈদের দুই–তিন দিন খাবারের বেলায় বেশি বিধিনিষেধ মানা হয় না। এত কিছুর পর এবার স্বাভাবিক লাইফস্টাইলে ফিরে আসার সময় হয়েছে। শরীরকে আবার রোজকার আদর্শ খাদ্যাভ্যাসে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। রোজা শেষে নিয়মিত খাবারের ধরনে ফেরার সময় হজমে অস্বস্তি ও বিপাকীয় ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। এমনকি শরীরের ওজনও বাড়তে পারে।
লক্ষ রাখুন
পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার দিয়ে শুরু করুন। গরম পড়েছে, তাই ভারী খাবার কমিয়ে দিন। বাড়তি খাওয়া এড়ানোর চেষ্টা করুন।
ভারী ব্যায়াম শুরু করার আগে হাঁটার মতো হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন।
ফল, শাকসবজি ও শস্যের মতো খাবারগুলো অগ্রাধিকার দিন। শর্করা, আমিষ, ভালো চর্বি ও ভিটামিন–মিনারেলসমৃদ্ধ সুষম খাবারে
অভ্যস্ত হোন।
খাদ্যতালিকায় রাখুন
ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট পেতে ফলমূল ও শাকসবজি।
লাল আটার রুটি, ওটস বা লাল চালের ভাতের মতো শস্যজাতীয় খাবার।
মুরগি, গরুর মাংস, মাছ বা ডিমের মতো উৎস থেকে খাবারে প্রোটিন যোগ করুন। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার রাখুন।
হজমে সহায়তা করার জন্য বেশ খানিকটা ফাইবারজাতীয় (আঁশ) খাবার রাখবেন।
কিছু পরামর্শ
উৎসব পেরিয়ে গেলে খাবারের মধ্যে সালাদ, শাকসবজি ও স্যুপ রাখুন, যা হজমে সাহায্য করবে এবং শরীরকে বেশি চাপ দেবে না। প্রচুর তাজা ফলমূল খান।
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। পানি শরীরের টক্সিন বের করতে সহায়ক। পাশাপাশি বাড়িতে তৈরি ফলের রস, দইয়ের লাচ্ছি, ডাবের পানি পান করতে পারেন এ গরমে।
ঈদের পর কাজের চাপে শরীর একটু ক্লান্ত ও ভারী অনুভূত হতে পারে। এর মানে এ নয় যে শারীরিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। ঈদের পর হালকা ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে শরীরের মেটাবলিজম ঠিক থাকে, খাবার ভালোভাবে হজম হয় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ঈদে কেক, পায়েস, সেমাই, জিলাপি ও অন্যান্য মিষ্টান্ন খাবার বেশি খাওয়া হয়। অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে শরীরে ও যকৃতে চর্বি জমতে পারে, রক্তে শর্করা বাড়তে পারে। তাই ঈদের পর মিষ্টি খাবারের পরিমাণ কমিয়ে প্রাকৃতিক বা অর্গানিক উৎস থেকে শর্করা গ্রহণ করুন, যেমন ফলমূল বা জটিল শর্করা।
উৎসবে ভারী খাবার থেকে ফিরে আসার জন্য প্রাকৃতিক ও সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ দুধ, দই, বাদাম, ওটস, চিয়া সিডস ইত্যাদি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
উৎসব ও রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্য পরিচিত সমস্যা। এটি থেকে বাঁচতে আঁশযুক্ত খাবার খান। প্রচুর পানি পান করুন।
মনে রাখবেন, রোজায় খাবারের সূচি পাল্টে যায়। রোজার পর আবার তা পরিবর্তন হয়। তাই সকালে স্বাস্থ্যকর নাশতা জরুরি। দুপুরে মাছ, ডাল, সবজি রাখুন। রাতে হালকা খাবার। তাহলে ধীরে ধীরে শরীর স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে ফিরতে পারবে।
লাজিনা ইসলাম চৌধুরী: পুষ্টিবিদ পিপলস হাসপাতাল, খিলগাঁও, ঢাকা
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।