চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বাস ও মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ছয় বছরের শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের পায়ের অস্ত্রোপচার হবে আজ। দুর্ঘটনায় মা বাবাকে হারানো শিশুটির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে বলে সমকালকে জানিয়েছেন তার স্বজন ও চিকিৎসকরা। বর্তমানে সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা আরাধ্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে তার।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে আরাধ্যের সঙ্গে থাকা আত্মীয় অসিত কুমার বাড়ই বলেন, আগের চেয়ে আরাধ্যের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। রোববার তার পায়ের সার্জারি হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আপাতত তাকে মুখে খাবার দেওয়া হচ্ছে না। সবাই আরাধ্যের জন্য আশীর্বাদ-দোয়া করবেন, যাতে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। 

বুধবারের দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আরাধ্যের বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মন্ডল। দুর্ঘটনায় বেঁচে গেলেও আরাধ্যের দুই পায়ের হাঁড় ভেঙে গেছে। মাথা, হাত, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছে। রক্ত জমাটও বেঁধেছে নানা অংশে। ঘটনার পর প্রথমে তাকে চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে এবং পরে অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে স্থানান্তর করা হয় আইসিইউতে। মা-বাবা যে বেঁচে নেই তা এখনও জানে না এই শিশুটি। বৃহস্পতিবার মা-বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও শেষবারের মতো মা-বাবাকে দেখার সুযোগ হয়নি তার। 

আরাধ্যের বাবা দিলীপ বিশ্বাস ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকার গাজীপুরের পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ছিলেন। আরাধ্য মা-বাবার একমাত্র সন্তান। এ পর্যন্ত এই সড়ক দুর্ঘটনায় আরাধ্যের মা-বাবাসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কলেজ ছাত্রী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমার। এ ঘটনায় ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা প্রেমার বাবা রফিকুল ইসলাম শামীম, মা লুৎফুন নাহার ও তাদের দুই মেয়ে আনীসা আক্তার (১৪) ও লিয়ানা (৮) ঘটনার দিনই মারা যান। এই দুর্ঘটনায় একে একে পাঁচজনের মৃত্যু হওয়ায় পরিবারটির আর কেউ বেঁচে রইল না।

আরাধ্যের পাশে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন
মা-বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন আরাধ্যের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় চমেক হাসপাতালে এবং বর্তমানে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা আরাধ্যের চিকিৎসা ও সেবায় পাশে রয়েছেন। স্কয়ার হাসপাতালে আরাধ্যের পাশে থেকে তার সুস্থতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রামের বিভাগীয় টিমের সদস্যরা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন আহত দ র ঘটন য় আর ধ য র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ