Samakal:
2025-08-01@09:13:03 GMT

আনন্দের শিক্ষা সফর

Published: 6th, April 2025 GMT

আনন্দের শিক্ষা সফর

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঐকতান’ কবিতার মতোই এক অনন্য বন্ধন গড়ে তুলেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের অষ্টম ব্যাচ। তারা নিজেদের নাম দিয়েছে ‘ঐকতান’। স্নাতক চতুর্থ বর্ষে 
থাকাকালীন তারা বান্দরবান ও কক্সবাজারে পাঁচ দিনের এক ফিল্ডওয়ার্ক আয়োজন করে। এই ভ্রমণ শুধু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা নয়, বরং শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার এক অনন্য অভিজ্ঞতা ছিল।
ভ্রমণের প্রথম পর্ব: বান্দরবান
নীলগিরি, নীলাচল, চিম্বুক পাহাড়, শৈলপ্রপাত, মেঘলা—বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের মন জয় করে নেয়। পাহাড়ি পথের প্রতিটি বাঁকে নতুন রোমাঞ্চ, প্রতিটি দৃশ্য ছিল শিক্ষণীয়। ভ্রমণ শুধু বিনোদন নয়, এটি বাস্তবজ্ঞান অর্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম। যেভাবে পাহাড়ের ঢালু পথে চলতে হলে ধৈর্য ও সতর্কতা প্রয়োজন, তেমনি জীবনের পথচলাতেও ধৈর্য ও স্থিরতা গুরুত্বপূর্ণ।
সমুদ্রের ডাকে কক্সবাজার
সুগন্ধা, কলাতলী, ইনানী, মহেশখালী, মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি—প্রতিটি স্থান যেন ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতা। ঢেউয়ের গর্জন, সমুদ্রের অসীমতা আর সূর্যাস্তের রঙিন দৃশ্য সবার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। সমুদ্রের মতোই প্রতিটি শিক্ষার্থী নতুন কিছু শেখার জন্য উন্মুখ ছিল। তাদের মাঝে দলগত সংহতি ও নেতৃত্বের গুণাবলি আরও সুদৃঢ় হয়।
ভ্রমণের শিক্ষণীয় দিক
আমরা সবাই ভাবি যে, জ্ঞান আহরণের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা হচ্ছে বই পড়া। কিন্তু বাস্তবে, প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের অন্যতম উৎকৃষ্ট মাধ্যম হচ্ছে ভ্রমণ। যে যত বেশি জায়গা ঘোরে, সে তত বেশি জানে ও শেখে। স্টাডি ট্যুরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ম্যানেজমেন্ট স্কিলের বিকাশ। চল্লিশ-পঞ্চাশ জন শিক্ষার্থীর একটি ট্যুর সফলভাবে পরিচালনা করতে হলে দরকার দক্ষ নেতৃত্ব, কৌশলগত চিন্তাভাবনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়া।
নেতৃত্ব ও সংগঠনের বিকাশ
স্টাডি ট্যুরে সবসময় একটি ‘লিড গ্রুপ’ থাকে, যারা পুরো আয়োজনের দায়িত্ব নেয়। প্রশাসনিক অনুমতি, বাস ও হোটেল ব্যবস্থাপনা, বাজেট পরিকল্পনা, সময়সূচি নির্ধারণ, যে কোনো সমস্যার সমাধান– এসব দক্ষতা গড়ে ওঠে এই ভ্রমণের মাধ্যমে। পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে।
ঐকতান: একতার শক্তি
এই ভ্রমণ ‘ঐকতান’ ব্যাচের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও গভীর করেছে। প্রতিটি মুহূর্ত ছিল শিক্ষণীয় ও আনন্দদায়ক। শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না থেকে জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ভ্রমণের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘ঐকতান’ ব্যাচের এই ভ্রমণ তাদের জীবনে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা তাদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যতের পথচলায় প্রেরণা জোগাবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ রমণ ভ রমণ র

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ