চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় মহড়া দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। হাতকড়া লাগানো সাজ্জাদের পরনে ভেস্ট, মাথায় ছিল হেলমেট। অস্ত্র হাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বিশেষ প্রশিক্ষিত সোয়াত সদস্যরা ছিলেন তার সামনে ও পেছনে। পুলিশ সদস্যরা হ্যান্ডমাইকে সন্ত্রাসীদের সতর্ক করছিলেন। সোমবার নগরীর অক্সিজেন ও রোববার রাউজান উপজেলা এলাকায় এই সন্ত্রাসীকে নিয়ে এভাবেই মহড়া দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আসামিকে নিয়ে এভাবে মহড়া দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। তবে পুলিশ বলছে, অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। 

গত ১৫ মার্চ রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স থেকে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি খুনসহ ১৭টি মামলা আছে। গ্রেপ্তারের পর ব্যবসায়ী তাহসিন হত্যা মামলায় সাজ্জাদকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ কোনো অস্ত্র উদ্ধার ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রোববার দ্বিতীয় দফায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ওইদিন বিকালে তাকে রাউজান উপজেলায় নিয়ে মহড়া দেওয়া হয়। 

আজ বিকেলে নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে নিয়ে মহড়া দেওয়ার সময় হ্যান্ডমাইকে পুলিশকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী ছোট সাজ্জাদকে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে গ্রেপ্তার করেছে সিএমপি। ছোট সাজ্জাদের মতো যদি কোনো সন্ত্রাসী চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে অবস্থান করে থাকে, তাদেরও এমন পরিণতি হবে। রাষ্ট্র কোনোদিন কোনো সন্ত্রাসীর কাছে হার মানবে না। আপনাদের আশপাশে কোনো সন্ত্রাসী যদি মাথাচাড়া দেয়, আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়েছে। এটি মহড়া নয়। যেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে সেগুলো ছিল সাজ্জাদের আস্তানা। তাকে নিয়ে বের হলেই লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তার সহযোগীরা যাতে ভয় পায় এ জন্য সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে তথ্য আদায় করা পুলিশের কাজ। এভাবে মাইকিং করে মহড়া দেওয়ার নজির নেই। তার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে অস্ত্র উদ্ধার, সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বের করতে মনোযোগী হওয়া উচিত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ