রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া এলাকায় সুমন গাজী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে মেরাদিয়া মধ্যপাড়া মসজিদ গলিতে এ ঘটনা ঘটে। স্বজনরা বলছেন, মামা মো. মোস্তফার হাতেই খুন হন সুমন।

নিহত সুমনের বড় ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মেরাদিয়া মসজিদে গলিতে থাকেন তারা। একই গলিতে মোস্তফা পরিবার নিয়ে থাকেন। আজ সকাল ৬টার দিকে বাড়ির সামনে সুমনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয় মোস্তফার। একপর্যায়ে মোস্তফা ও তার পরিবারের লোকজন মিলে সুমনকে ধরে ঘরের ভেতর নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে তাকে মসজিদের পাশে ফেলে রেখে যান তারা। খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় সুমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনরা জানান, আজ সকালে সুমন তার মামা মোস্তফার ঘরের জানলা ভেঙেছে এই অভিযোগে তাকে মারধর করা হয়। এর আগেও সুমনকে মারধর করেছিলেন মোস্তফা। নিহত সুমন কারওয়ান বাজারে সবজি কুড়িয়ে বিক্রি করতেন। দুই বছর আগে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তার চলাফেরায় অস্বাভাবিকতা দেখা যায়।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মাসুদ আলম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য খিলগাঁও থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য

এছাড়াও পড়ুন:

লামিয়ার মৃত্যুতে আরও সংকটে পরিবার, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মা ও বোন

গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে মারা যান স্বামী জসিম উদ্দিন। এরপর গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মারা যান বড় মেয়ে লামিয়া আক্তার (১৭)।   

স্বামী এবং মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রুমা বেগম (৩৫)। একই অবস্থা লামিয়ার ছোট বোন বুশরা আক্তারের (১৪)। লামিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

রবিবার (২৭ এপ্রিল)  রাতে লামিয়াকে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফনের পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্বজনরা পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বজনরা এ দুজনকে নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার গলায় ফাঁস দেওয়া নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

রবিবার মাগরিব নামাজ বাদ পাঙ্গাশিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে লামিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ নামাজে অংশ নেন বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ স্থানীয় শতশত মানুষ।

পরিবার জানায়, গত ১৮ মার্চ দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন লামিয়া। সাহসিকতার সাথে তিনি নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকেই লামিয়া গভীর মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। সামাজিক অবহেলা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তার মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়। সেই হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে পরিবারের ধারণা।

লামিয়ার দাদা শহীদ জসিম উদ্দিনের বাবা আবদুস সোবাহান বলেন, “আমরা এ শোক সইতে পারছিনা। কাঁদতে কাঁদতে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমরা কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ছেলের বউ ও ছোট নাতিকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।” 

বলেন, “যাদের কারণে লামিয়া আত্মহত্যা করেছে আমরা তাদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।”

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা আবুজর মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, “লামিয়ার মা এবং বোন হাসপাতালের ভর্তির বিষয়টি আমাকে অবগত করেনি। তবে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইমরান/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লামিয়ার মৃত্যুতে আরও সংকটে পরিবার, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মা ও বোন