সরাইলে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক
Published: 8th, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরকান্দা গ্রামের আমীর আলীর বংশ এবং চান্দের বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে চান্দের বংশের শাহনেওয়াজ নামের এক তরুণের সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ জন্য চান্দের বংশের লোকজন আমীর আলীকে দায়ী করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, থানার ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনও, ওসি এবং সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন, সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান চৌধুরী, এএসআই আলা উদ্দীন, পুলিশ সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও মশিউর রহমান ইটের আঘাতে আহত হন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ রাতে চারজনকে আটক করে।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আমীর আলীর পক্ষের লোকজন চান্দের বংশের অন্তত ১০টি বতসবাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এ ছাড়া শাহজাহান মিয়ার বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর।
সরাইল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আলী মিয়া (৪০) ও কানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি চান্দের বংশের পক্ষের। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতের ঘটনায় আমরা ইটের আঘাতে ব্যথা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রামের অবস্থা শান্ত রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ইউএনও মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। রাতের অন্ধকারে ইটের আঘাত পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটি হতেই পারে। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কথায় কথায় সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আমি চাই এখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করুক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল কজন স ঘর ষ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে বালতি থেকে ককটেল ছুড়তে ছুড়তে সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ
একদল তরুণ ও যুবক বালতি হাতে দৌড়াচ্ছেন। কিছু একটা তুলছেন আর ছুড়ে মারছেন। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হচ্ছে। ধোঁয়ায় চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে।
শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামে এভাবে ৬০-৭০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিবদমান দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
এর আগে এ বছরের ৫ এপ্রিল ঠিক একইভাবে বিলাসপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
জাজিরা থানা সূত্র জানায়, জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ব্যাপারী এবং একই এলাকার তাইজুল ইসলাম ছৈয়ালের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ আছে। দুজনই বিলাসপুরের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। নাসির উদ্দিন বিলাসপুরের চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী এবং তাইজুল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল জলিল মাতবরের সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আজ ওই দুই পক্ষের লোকজন গ্রামের দুটি স্থানে অবস্থান নিয়ে একে অপরের ওপর ককটেল ছুড়ে মারেন। তাঁরা দুই পক্ষের সমর্থকদের বসতবাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন অন্তত ৬০-৭০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। ওই ঘটনায় দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
দুই পক্ষের সমর্থকদের বসতবাড়িতেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুরে