খুলনার সেই ৩ প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে জানেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
Published: 8th, April 2025 GMT
হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের পর বন্ধ রয়েছে খুলনা নগরীর কেএফসি, ডোমিনোজ পিজা ও বাটার শোরুম। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠান ৩টি। এ ঘটনায় আলাদা ৩টি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় প্রতিষ্ঠান ৩টি আবার কবে চালু হবে তা বলতে পারছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসি নামের রেস্টুরেন্টের সামনে দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, লাল দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দোতলায় কেএফসিতে উঠার সিড়ির সামনে চেয়ারে বসে আছেন কেএফসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তারা জানান, কেএফসিতে যে খাবার ছিল তা লুটপাট হয়েছে, অনেক খাবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এছাড়া সাইনবোর্ড, ভেতরের চেয়ার-টেবিল, ডেস্ক, ক্যাশ কাউন্টার, টিভি, এসি, ফ্রিজসহ সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলেছে। ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা নিয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে।
তারা জানান, বহুতল ভবনটির দোতলায় কেএফসি এবং নিচতলায় ডোমিনোজ পিজাতে ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়েছে। তৃতীয় তলায় বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল বিভাগের গ্লাস ভাঙচুর করেছে। এছাড়া নিচতলায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ লুট করার চেষ্টা করলেও তা পারেনি।
কেএফসির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সুজন মণ্ডল জানান, তাদের কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন। তবে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠানটি আবার কবে নাগাদ চালু হবে তা তিনি বলতে পারছেন না।
ডোমিনোজ পিজা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির কোনো কিছুই স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে অতি উৎসাহী লোকজন। প্রতিষ্ঠানের ২০/২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের সামনে ঘোরাফেরা করছেন।
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো.
শিববাড়ি মোড়ে বাটার শোরুমে গিয়ে দেখা গেছে, ত্রিপল দিয়ে শোরুমের সামনের অংশ ঢেকে রাখা হয়েছে। কর্মচারীদের সঙ্গে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে ভাঙা কাচের স্তূপ। ভেঙে দেওয়া আসবাবপত্র ও জুতা-স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
বাটার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের ৯০/৯৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। তারা মামলা করবেন। তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪ জন। প্রতিষ্ঠানটি আবার কবে চালু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে আটক করেছে। তাদেরকে সোনাডাঙ্গা থানায় রাখা হয়েছে।
তবে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ নিরীহ কয়েকজনকে আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। সোনাডাঙ্গা থানা চত্বরে দাড়িয়ে ছোট বয়রা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে হৃদয় সোমবার রাতে দাদা বাড়ি থেকে ফিরছিল। রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে।
একই এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, আমার ছেলে ইরফানকে রাতে পুলিশ আটক করেছে। সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সে কোনো ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
নগরীর টুটপাড়া মহিরবাড়ি খালপাড় এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক আশরাফুলকেও কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ আটক করেছে বলে স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।
অভিযোগ অস্বীকার করে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভিডিও এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। নিরীহ কাউকে আটক করা হয়নি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের পর গত সোমবার সন্ধ্যায় ‘বিক্ষুব্ধ লোকজন’ নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসিতে ও ডোমিনোজ পিজায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এরপর নগরীর শিববাড়ি মোড়ে বাটার শোরুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ল টপ ট র স মন ক এফস ঘটন য় নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকাত দেখে অসুস্থ গৃহকর্তা, পানি পান করিয়ে সুস্থ করার পর টাকা-স্বর্ণালংকার লুট
প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ওষুধ ব্যবসায়ী সোবাহান হাওলাদার (৬০)। রাত দুইটার দিকে দরজা ভেঙে একদল ডাকাত ঘরে প্রবেশ করলে তিনি আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ডাকাতেরা তাঁকে পানি পান করতে দিয়ে তাঁর সেবাযত্ন করে। পরে তারা স্বর্ণালংকার, টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া একই বাড়ির সোবাহান হাওলাদারের ভাতিজা আধা পাকা ঘরের দরজা ভেঙে ডাকাত দল টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ডাক–চিৎকার না দেওয়ায় ডাকাতেরা তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেনি। তাঁদের দাবি দুই ঘর থেকে সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালংকার, ৩৮ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল লুট করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন সুবিদখালী বাজারের ওষুধের ব্যবসায়ী সোবাহান হাওলাদার ও তাঁর ভাতিজা ঝাটিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম।
জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাত দুইটার দিকে বৈরী আবহাওয়া ছিল। বৃষ্টির মধ্যে মুখোশ পরা একদল ডাকাত তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে কাপড় দিয়ে সবার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। তারা নিজেদের ডাকাত পরিচয় দেয় এবং ঘরের সব আসবাব তছনছ করে ১৮ হাজার টাকা ও আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার এবং অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
ডাকাতেরা দুটি ঘরের সব আসবাব তছনছ করে সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৩৮ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে