জিতলেই সরাসরি ফেডারেশন কাপের ফাইনালে—এমন সমীকরণ সামনে নিয়েই আজ কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী লিমিটেড।

কোন দল পাবে ফাইনালের টিকিট, সেই উত্তর মেলেনি নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে। ১০ জন নিয়েও গোল শোধ করে ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায় পিছিয়ে পড়া আবাহনী। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ১-১।

কিন্তু অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও দুই দলকে আলাদা করা যায়নি। টাইব্রেকারে প্রথম শটে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত গোলকিপার মিতুল মারমার নেপুণ্যে ৪-২ গোলে কিংসকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে আবাহনী।

টাইব্রেকারের ঠিক আগে গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে মাঠে নামান কিংস কোচ ভালেরিউ তিতা। প্রথম শটেই আনিসুর আটকে দেন আবাহনীর জাফর ইকবালের দুর্বল শট। আবাহনীর হয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে লক্ষ্য ভেদ করেন দুই বিদেশি রাফায়েল ও এমেকা। কিংসের জোনাথন, মোরছালিনও গোল  করেন।

কিন্তু কিংসের রাব্বি হোসেনের তৃতীয় শট আটকে দিয়ে আবাহনীকে ম্যাচে ফেরান গোলকিপার মিতুল মারমা। কিংসের চতুর্থ শট বারের ওপর দিয়ে মারেন নবাগত ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডেসিয়েল এলিস ডস সান্তোস। পঞ্চম শটে ইব্রাহিম গোল করে আবাহনীকে নিয়ে যান ফাইনালে। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন মিতুল।

আজই ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পিছিয়ে পড়েও ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। এই ম্যাচও ৯০ মিনিট শেষে ১-১ ছিল। অতিরক্তি সময়ে গাম্বিয়ার ফরোয়ার্ড সলোমন কিংয়ের মহামূল্যবান গোলে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে রহমতগঞ্জ। ম্যাচসেরাও হয়েছেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে ফিরে আসা সলোমন কিং।

এই ম্যাচ জেতায় ফাইনালে ওঠার একটা সুযোগ থাকছে রহমতগঞ্জের সামনে। আগামী মঙ্গলবার তৃতীয় কোয়ালিফায়ারে কিংসের সঙ্গে লড়বে পুরান ঢাকার দলটি। সেই ম্যাচের জয়ী দলের সঙ্গে ২২ এপ্রিল ফাইনালে খেলবে আবাহনী, ২০২৩ সালের পর আবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠল তারা।

কিংস-আবাহনী ম্যাচের প্রথমার্ধে ছিল কার্ডের ছড়াছড়ি, যার মধ্যে একটি লাল কার্ড। ৪২ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আবাহনীর সেন্টার ব্যাক আসাদুজ্জামান বাবলু। মিডফিল্ডার রবিউলকে তুলে কোচ মাঠে পাঠান ডিফেন্ডার শাকিল হোসেনকে। কিন্তু ৫৬ মিনিটে ভুল করে বসে রক্ষণ। এই সময় গোল উপহার দিয়েছে তারা প্রতিপক্ষকে।

কিংসের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জোনাথনের আপাত নীরিহ ক্রসে ফ্লিক করে বল জালে পাঠান মজিবর রহমান জনি। মিতুল  দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর পাশে ছিলেন শাকিল। বলটা কে ধরবেন, সেই দ্বিধাতেই গোলটা হয়ে যায়। এরপর ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করে গেছে কিংস। কিন্তু ১০ জনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যতটা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা, ততটা নিতে পারেনি লাল জার্সিধারীরা। ১০ জনের দলকে হারাতে না পারা কিংসের বড় ব্যর্থতাই।

উল্টো ৮৩ মিনিটে রাফায়েলের ফ্রি–কিক থেকে আবাহনী ম্যাচে ফেরে। আবার ফিরে এসে প্রথম ম্যাচেই ঝলক দেখান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। কিংস গোলকিপার মেহেদি হাসান শ্রাবণ বল ফিস্ট করেন। ফিরতি বল আলতো টোকায় জালে পাঠান বদলি ফরোয়ার্ড আরমান ফয়সাল আকাশ।

মধ্যবর্তী দলবদলে আবাহনী শক্তি বাড়ালেও চোটের কবলে পড়ে কিছুটা শক্তি হারিয়েছে কিংস। ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ, তারিক কাজী দলে নেই। সদ্য বাবা হওয়া মিডফিল্ডার মিগুয়েল ফেরেইরাও ব্রাজিল থেকে ফেরেননি। আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার লেসকানো দলেই ছিলেন না। সব মিলিয়ে কিংসের খেলার ধার কমে গেছে অনেকটাই। চলতি মৌসুমে তারা দুবার হেরেছে আবাহনীর কাছে। যদিও আজকের ম্যাচটার ফল লেখা থাকবে ড্র।

গত ডিসেম্বরেই প্রিমিয়ার লিগে শতভাগ স্থানীয় খেলোয়াড় নিয়েই কিংসকে হারিয়েছিল মারুফুল হকের দল। সেটি ছিল প্রিমিয়ার লিগে আট হার আর দুই ড্রয়ের পর কিংসের বিপক্ষে আবাহনীর প্রথম জয়। সেই একই মাঠেও আবাহনী আজ দুই বিদেশি—ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল ও  এমেকাকে নিয়ে ট্রাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে হাসি ফোটাল সমর্থকদের মুখে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন: বিএনপির যে প্রার্থীদের সঙ্গে লড়বেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের যেসব আসনে নির্বাচন করার কথা রয়েছে, সেখানেও প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই তারকারা

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব- সমর্থকদের বিক্ষোভ

বিএনপির ঘোষিত আসনভিত্তিক তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা) আসনের তাদের প্রার্থী এম এ কাইয়ুম। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

রংপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ এনামুল হক ভরসা। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ নওশাদ জমির। এই আসনে নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের।

কুমিল্লা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

চাঁদপুর-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে মো. মমিনুল হককে। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এখন পর্যন্ত আমাদের দলের আসনভিত্তিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়নি। যখন চূড়ান্ত করা হবে, আপনাদের জানানো হবে।”

এর আগে রবিবার (৩ নভেম্বর) সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা ৩০০ আসন ধরে এগোচ্ছি। ঢাকা থেকেই আমি দাঁড়াব। আর কে কোন আসনে দাঁড়াবেন, আমরা প্রার্থী তালিকা এ মাসেই দিতে পারি।”

অবশ্য বিএনপি ও এনসিপি চূড়ান্ত মনোনয়ন না দেওয়া পর্যন্ত যে কোনো আসনে যেকোনো সময় পরিবর্তন আসতে পারে বলে তারা ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। 

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ