পেটে চর্বি জমে গেলে আমরা পেটের ব্যায়াম করি। কিন্তু ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র পেটের ব্যায়াম করে চর্বি কমানো সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয়?— চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক।

ফিটনেস বিষয়ক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এ এস তাজ একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমরা অনেকে মনে করি পেটের ব্যায়াম করবো এবং পেটের চর্বি কমে যাবে। শুধুমাত্র পেটের ব্যায়াম করে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব না। আমরা যদি আমাদের পুরো শরীরকে একটা সুইমিংপুল হিসেবে ধরি, সুইমিংপুলে যখন আপনি পানি তুলেন তখন গভীর এবং অগভীর সব জায়গা থেকে এক সঙ্গে পানি কমবে। কিন্তু আমরা রেজাল্ট সর্ব প্রথম অগভীর জায়গায় দেখবো। সর্ব প্রথম দেখা যাবে সিঁড়ি থেকে পানি কমে গেছে। আমাদের শরীরটাও একই।’’

এ এস তাজ আরও বলেন, ‘‘মেয়েদের ক্ষেত্রে হিপ থেকে হাঁটু পর্যন্ত ফ্যাট জমে। চর্বির জন্য এটা গভীর জায়গা। আর ছেলেদের নাভি। মেয়েরা যদি অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে তাহলে তাদের হিপ থেকে নিচের দিকে চর্বি জমতে থাকবে। ছেলেরা যদি অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে সবার প্রথমে তাদের পেট মোটা হতে শুরু করে। এবং আপনি যদি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন শুরু করে তাহলে সবার প্রথমে পেট এবং হিপ থেকে রেজাল্ট পেতে শুরু করবেন।’’

আরো পড়ুন:

কখন গোসল করা ভালো

দাম্পত্য সম্পর্ক নতুনভাবে রাঙিয়ে নেওয়ার চার উপায়

তাজ জানান,  যেকোন ব্যক্তি ডায়েট শুরু করলে সবার প্রথমে তার মুখ শুকিয়ে যায়। হাতের কবজি এবং পায়ের কবজি শুকিয়ে যায়। কারণ এগুলো হচ্ছে অগভীর জায়গা। পেটের চর্বি কমাতে ফুল বডি এক্সারসাইজ করতে হবে। যেন আপনার ব্রেন ফিল করে যে এই ব্যক্তির প্রত্যেকটা মাসল আগের থেকে বেশি কাজ করে। তখন আপনি রেজাল্টটা বেশি পাবেন। মেটাবোলিক রেট ফার্স্ট হবে। ব্লাড হার্ট থেকে হাতের আঙুল পর্যন্ত পৌঁছাবে। পায়ের আঙুল পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং ব্রেন পর্যন্ত পৌঁছাবে। সুতরাং ফিটনেস পেতে হতে পুরো বডির এক্সারসাইজ করতে হবে।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ট র ব য য় ম কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ