বাসচালকে মারধরের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, ৫ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক
Published: 9th, April 2025 GMT
বাগেরহাটের কাটাখালি এলাকায় একজন বাসচালককে মারধর করার প্রতিবাদে খুলনার পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে আন্দোলন করেছেন শ্রমিকরা।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে সরে যান। ফলে পাঁচ ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাস শ্রমিকরা জানান, আজ ভোরে রূপসা থেকে মোংলা রুটে যাত্রী নিয়ে রওনা হন বাসচালক বাচ্চু। কাটাখালী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী তোলার সময় মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের বাঁধার মুখে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা বাসচালক বাচ্চুকে মারধর করে। পরে বাচ্চু পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান, তার কাছ থেকে ঘটনা জানতে পেরে বাস শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি, প্রাণ গেল যুবকের
কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মোংলা, বাগেরহাট, রামপাল, ভান্ডারকোট রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে শ্রমিকরা হাইওয়ে রোডের কুদির বটতলা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে সব প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে ঢাকাসহ দক্ষিণ অঞ্চলের ২১ জেলার সব রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
রূপসা থানার ওসি মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, “সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে মাহেন্দ্র চলাচল বন্ধ এবং চালকের ওপর হামলার ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড ও হাইওয়েতে সব প্রকার যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর তেলের দামে অস্থিরতা
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আজ শুক্রবার ইসরায়েল হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। এতে জ্বালানির তেলের জোগানে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
অপরিশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৬ দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৫ দশমিক ৬৫ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৮ দশমিক ৫০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এ ছাড়া মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬ দশমিক ৪৩ ডলার বা ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৪৭ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৭ দশমিক ৬২ ডলারে উঠেছিল, যা কিনা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির মানে হচ্ছে দুনিয়াজুড়ে সুপারমার্কেটে খাবারের দাম, গাড়িতে তেল ভরার খরচ, পরিবহন ব্যয়—সবকিছুর দাম বাড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, ‘এখনই বলা কঠিন, তবে সম্ভবত হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় সবাই উদ্বিগ্ন।’
হরমুজ প্রণালি বিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ। বিশ্বের মোট জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়েই সরবরাহ হয়। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও গ্যাস উৎপাদক দেশগুলো এই পথ দিয়েই তাদের জ্বালানি বিশ্ববাজারে পাঠায়। উত্তরে ইরান, দক্ষিণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঘেরা হরমুজ প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশ্লেষক সল কাভোনিক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান যদি আঞ্চলিক জ্বালানি তেল পরিকাঠামোতে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তেলের সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তিনি আরও জানান, চরম পরিস্থিতিতে ইরান অবকাঠামোতে হামলা বা হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইসরায়েলকে এ হামলার জন্য কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলা একতরফা পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, এতে ওয়াশিংটনের কোনো অংশগ্রহণ নেই। তবে তেহরানকে সতর্ক করে তিনি বলেন, তারা (তেহরান) যেন মার্কিন স্বার্থ বা ব্যক্তিদের লক্ষ্য না করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিলিপ নভার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, ইরান পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে শুধু তেলের সরবরাহ বিঘ্ন ঘটাবে না, আশপাশের অন্যান্য তেল উৎপাদকদের দেশগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।