নামাজে দুই রাকাত বা চার রাকাতের বৈঠকে আমরা যে ‘আত-তাহিয়্যাতু’ পাঠ করি, তার আরবি নাম হলো তাশাহ্হুদ। তাশাহ্হুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া, যা নামাজের প্রত্যেক বৈঠকে পড়তে হয়। তাশাহুদ বা আত-তাহিয়্যাতু হচ্ছে মহান আল্লাহ ও মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি কথোপকথন; যা মিরাজের রাত্রিতে সংঘটিত হয়।
নামাজে যে দোয়াটি পড়া হয় এর অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করা প্রয়োজন।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.
তাশাহহুদ
তাশাহহুদ উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত ত্বাইয়্যিবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু; আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থাৎ, সমস্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী, আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত নাজিল হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি। আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল। (বুখারি, হাদিস: ৬২৬৫)
আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ এর ফজিলত০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তাশাহুদ পড়ার নিয়ম
নামাজি ব্যক্তি নামাজের মধ্যে যখন মৌখিকভাবে একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, তখন তার আঙুলও এই সাক্ষ্য দেবে। তাই ‘আশহাদু আল্লা… ইলাহা’ পর্যন্ত পৌঁছবে, তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা আঙুল মিলিয়ে গোল বৃত্ত বানাবে এবং তর্জনী আঙুল দ্বারা ইশারা করবে। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ‘ইল্লাল্লাহ’ বলার পর শাহাদত আঙুল নিচু করবে। ইশারা শেষ করে আঙুল আর নাড়া চড়া করবে না। তবে অন্য আঙুলগুলো আপন অবস্থায় নামাজের শেষ পর্যন্ত থাকবে। (সহিহ মুসলিম: ১,৩৩৬-১,৩৩৭; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫/২৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা: ১,১৯৩, আবু দাউদ: ৯৮৯)
আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।