যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট দলের সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার অভিযোগ করেছেন, বিরোধীদের শায়েস্তা করার জন্যই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড নতুন টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। তাঁর শঙ্কা, এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধীদের কোণঠাসা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গোয়েন্দা কমিটির সদস্য সিনেটের মার্ক ওয়ার্নার এসব অভিযোগ করেন।

ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেটিক পার্টির এই সিনেটর বলেন, ‘জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অধীনে ডিরেক্টরস ইনিশিয়েটিভ গ্রুপ (ডিগ) নামের একটি নতুন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এটা সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। অথচ জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তাঁর পূর্বসূরিরা এ রকম কোনো কিছু করার আগে আমাকে জানাতেন।’

মার্ক ওয়ার্নার বলেন, ‘নতুন টাস্কফোর্সকে আমার কাছে বিরোধীদের শায়েস্তা করার অনুমতিপত্র বলে মনে হচ্ছে। তবে এটার প্রভাব আরও সুদূরপ্রসারী হবে। এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

তুলসী গ্যাবার্ডের মুখপাত্র অলিভিয়া কোলম্যান আগের দিন বুধবার বলেছেন, ডিগ সম্পর্কে সবকিছু ‘স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ’ করেছেন গ্যাবার্ড। এটা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জনসম্মুখে তুলে ধরেছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাস্কফোর্সের ঘোষণা দিয়েছেন। পরে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তিনি এই বিষয়ে কথা বলেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, তুলসী গ্যাবার্ড মঙ্গলবার ডিগের ঘোষণা দিলেও তিনি যেসব প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন, সেগুলো জানুয়ারি মাসের শুরুর দিক থেকে কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে।

মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, ট্রাম্পের আদেশ অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ‘স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি’ নিশ্চিত করাই ডিগের উদ্দেশ্য।

তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কাজ করছেন কি না, তা তদন্ত করছে টাস্কফোর্স। এ ছাড়া গভীরভাবে জেঁকে বসা রাজনীতিকরণের মূলোৎপাটন করছে, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের অননুমোদিত প্রকাশ সামনে আনছে এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ করছে।

তুলসী গ্যাবার্ড দাবি করেন, কিছু মেধাবী গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নিয়ে ডিগ গঠন করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ‘নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার’ কথা জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, এসব গোয়েন্দা সংস্থাকে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

ডিগ এরই মধ্যে কী কী কাজ করেছে, সেগুলোর কিছু উদাহরণ দিয়েছেন তুলসী গ্যাবার্ড। এসব কাজের মধ্যে করোনার উৎপত্তি এবং প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড নিয়ে গোপন নথি প্রকাশ অন্যতম। এর মধ্যে করোনাসংক্রান্ত নথি প্রকাশ করা হয়েছে জানুয়ারির শেষের দিকে। আর জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের নথি প্রকাশ করা হয়েছে মার্চ মাসের মাঝামাঝি।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে গ্যাবার্ড জানান, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এবং সিনেটর রবার্ট এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি প্রকাশের প্রস্তুত চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল, বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব থেকে সোয়াপ করে টাকা তোলা যাবে

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল। এখন থেকে রপ্তানিকারকেরা নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রা (এফসি) হিসাব থেকে সোয়াপের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে ৩০ দিনের পুলে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা এবং রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা-টাকা সোয়াপ চুক্তি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সোয়াপ কী

সার্কুলার অনুসারে, আলোচ্য সোয়াপ চুক্তি বলতে একটি নির্দিষ্ট হারে ও মেয়াদে টাকার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রার স্পট ক্রয় এবং একই সঙ্গে একটি নির্ধারিত তারিখে পুনঃবিক্রয়ের ব্যবস্থাকে বোঝাবে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের নিজস্ব উৎসের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহৃত হবে। সোয়াপের মেয়াদ ইআরকিউ তহবিলের ব্যবহারযোগ্য মেয়াদের বেশি হতে পারবে না এবং ৩০ দিনের পুল তহবিলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন মেয়াদি সোয়াপ করা যাবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের হার নির্ধারণে বাজারভিত্তিক বা খরচভিত্তিক সুদ বা মুনাফার পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া যাবে। আলোচ্য সোয়াপ লেনদেনকে ঋণ বা অর্থায়ন সুবিধা হিসেবে গণ্য করা হবে না। সোয়াপের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা শুধু রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চলতি মূলধনের চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা যাবে। কোনো ফটকা উদ্দেশ্যে ওই অর্থ ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শিল্প খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগের কারণে রপ্তানিকারকদের স্বল্পমেয়াদি তারল্য চাপ কমাতে সহায়তা করবে। এতে প্রচলিত রপ্তানি ঋণের ওপর নির্ভর না করেও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালাতে পারবেন। পাশাপাশি এটি বাজারভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনাকেও উৎসাহিত করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ