ইসরায়েলের অবরোধে সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণের অভাবে গাজায় আহত ও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হলেও পাচ্ছে না ওষুধ। ইসরায়েল বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখায় বিভিন্ন হাসপাতালে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পোলিওসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে গাজার মানুষ ‘ধীর-মৃত্যু’র দিকে এগিয়ে চলেছেন। সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।
কথাগুলো বলছিলেন বিশ্বব্যাপী কাজ করা চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের (এমএসএফ) জরুরি বিভাগের সমন্বয়ক মিরিয়াম লারৌসি। গাজার খান ইউনিসের আল মাওয়াসি থেকে আলজাজিরাকে তিনি বলেন, প্রতিদিনই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এতে লোকজন স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিকঠাক করতে যুদ্ধবিরতির কোনো বিকল্প নেই।
গাজার অন্তত ১০ হাজার মানুষকে জরুরি
ভিত্তিতে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল শুক্রবার জানায়, গাজায় জরুরি ওষুধের মজুত একেবারেই কম। এতে বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ অস্ত্রোপচার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেন, ‘আমাদের প্রধান তিন জরুরি উপাত্ত– অ্যান্টিবায়োটিক, আইভি ফ্লুইড ও ব্যাগের রক্ত নেই। গত ২ মার্চ ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এ অবস্থায় গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার দক্ষিণ গাজায় অন্তত ১০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে সাত শিশু রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে গাজার উত্তরাংশ। সেখানে গাজা সিটি থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল।
৩৬ হামলায় কেবল নারী-শিশুর মৃত্যু : জাতিসংঘ
গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের চলমান হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, এসব হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলছে, ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন করে গাজার আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে ২২৪টি হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে ৩৬টিতে প্রাণ গেছে কেবল নারী ও শিশুর।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে গৃহদাহ
মিডলইস্ট মনিটর শুক্রবার জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে একটি চিঠিতে সই করে রোষানলে পড়েছেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ও প্রায় ১ হাজার রিজার্ভ সেনা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তাদের বরখাস্ত করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামির। সপ্তাহের শুরুতে গাজায় সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর (আইএএফ) সেনারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখেন। চিফ অব স্টাফ জামির বলেন, সেনাসদস্যরা এ ধরনের কোনো চিঠিতে সই করে আবার চাকরিতে ফিরতে পারেন না। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
‘কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই’
নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেছেন, ‘‘কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম।’’
শুক্রবার (১৩ জুন) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাশটিলা-৭ ও সিলেট-১০ গ্যাস কূপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
১৩ লাখ ২০ হাজার টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার
কমল ডিজেল-অকটেন-পেট্রোলের দাম, কেরোসিনে বেড়েছে ১০ টাকা
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘‘গৃহস্থালিতে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে অপচয় করা হয়। গ্যাস সংযোগ বন্ধ করতে পারলে সেটাই হতো সঠিক সিদ্ধান্ত। যেখানে শিল্প-কারখানা পর্যাপ্ত গ্যাস পাচ্ছে না, সেখানে বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়া মানে অপচয় বাড়ানো। এ কারণে নতুন সংযোগ আর নয়।’’
সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আবাসিক গ্যাস সংযোগ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন হয়, সেসব অঞ্চলে সরকার স্বল্প মূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেবে।’’
ফাওজুল কবির বলেন, ‘‘দেশে প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উৎপাদন কমছে। ফলে আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে এলএনজি আমদানি কমাতে।’’
উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘‘কৈলাশটিলা-৭ এবং সিলেট-১০ নম্বর কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।’’
ঢাকা/নূর/রাজীব