খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে ও চলমান অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত করতে অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন জানিয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী ও স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

কুয়েটে আগামী ১৫ এপ্রিল দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তবে এখনই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। এ জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কাল রোববার ক্যাম্পাসে ফিরে সবাই একসঙ্গে হলে ওঠার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘটিত অনভিপ্রেত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সব আবাসিক হল খালি করে সিলগালা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন সাপেক্ষে দ্রুত আবাসিক হল খুলে দেওয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার লক্ষ্যে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

কুয়েট প্রশাসনের দাবি, প্রশাসন শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতি আন্তরিকভাবে সম্মতি দিয়েছে এবং ইতিমধ্যে অধিকাংশ দাবি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অবশিষ্ট দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঘটনার প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে সিন্ডিকেটে গঠিত তদন্ত কমিটি নিরলসভাবে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ১৩ এপ্রিলের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনকুয়েটে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দফায় দফায় সংঘর্ষ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কুয়েটের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু শিক্ষার্থী ও স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রকৃত অপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে ও চলমান অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত করতেই আইন অমান্য করে ১৩ এপ্রিল হলে প্রবেশ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে সব শিক্ষার্থীকে এ ধরনের অপপ্রচারে প্রভাবিত না হয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ও অনভিপ্রেত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না হতে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনকুয়েটে প্রথম হামলা নিয়ে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটিও করা হয়েছে। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

আরও পড়ুনকুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের মামলা, আসামি অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনকুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় সময় বাড়িয়েও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি০৫ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ঘটন র ঘটন য় তদন ত ক ত কর র ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

যাই কিছু হোক না কেন নির্বাচন এক দিনও পেছাবে না: প্রেস সচিব

যাই কিছু হোক না কেন নির্বাচন এক দিনও পেছাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, “আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।” 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে   তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রেস সচিব বলেন, “আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন—প্রধান উপদেষ্টা যেদিন নির্বাচন হওয়ার কথা বলেছেন, সেদিনই নির্বাচন হবে। একদিনও পেছানো হবে না। সুন্দর, অবাধ ও নিরপেক্ষ পরিবেশে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশেই জাতীয় ঐকমত্য গঠনে দীর্ঘ সময় লাগে। তুলনামূলকভাবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সময়ে একাধিকবার বসেছে, আলোচনা করেছে। এটা ইতিবাচক প্রবণতা। আমরা আশা করছি,  ‘জুলাই সনদ’  একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক দলিল হবে।” 

তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে খসড়া সনদ তৈরি, যাচাই-বাছাই ও সমন্বয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছ। আজ বৈঠক চলছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামুল কবীর। সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে আয়োজিত এই সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেস সচিব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি মাসউদুল হক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ