বর্ষ বরণের প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
Published: 13th, April 2025 GMT
বাঙালির অন্যতম উৎসব বাংলা নববর্ষের আগমনে সারা দেশজুড়ে বইছে আনন্দের হাওয়া। পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার আনন্দে উদ্দীপ্ত পুরো জাতি। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি সরকারি তিতুমীর কলেজও।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটি শেষে আবারো চিরচেনা পরিবেশে ফিরেছে সরকারি তিতুমীর কলেজ। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্ত। চলছে আগামীকালের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পূর্ব প্রস্তুতি। ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষার্থীরা রংতুলি হাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আলপনা আঁকায়।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তা, অডিটোরিয়াম চত্বর, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ও বিভাগের প্রাঙ্গণ জুড়ে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ছোঁয়ায় ফুটে উঠেছে নানা রঙের মনোমুগ্ধকর আলপনা। যেন কলেজ প্রাঙ্গণ তার অতীতের সব গ্লানি ঝেড়ে ফেলে ফিরে পেয়েছে এক নতুন প্রাণচাঞ্চল্য। এসব আয়োজন বাংলা নববর্ষের আমেজকে আরো দ্বিগুণ করে তুলেছে।
শিক্ষার্থীদের মনে একটাই কামনা, পুরোনো বছরের সকল গ্লানি, জরা ও ক্লান্তি মুছে গিয়ে নতুন বছর যেন তাদের জীবনে নিয়ে আসে নতুন রঙ, নতুন স্বপ্ন ও আনন্দের বারতা।
তিতুমীর আর্ট ক্লাবের এক সদস্য জানান, বাংলা নববর্ষ সবার প্রিয় একটা উৎসব। এ দিনটিকে ঘিরে সবার মধ্যে আলাদা একটা উচ্ছ্বাস কাজ করে। আলপনা আঁকার মাধ্যমে আমরা আমাদের আনন্দ আর উদ্দীপনাটুকু প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। নিজের হাতে রঙ তুলিতে সাজানো এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত।
ঢাকা/হাফছা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু