Samakal:
2025-09-18@04:57:49 GMT

ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ১৭৬ ইটভাটা

Published: 17th, April 2025 GMT

ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ১৭৬ ইটভাটা

দিনাজপুরে লোকালয়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ কোনো দপ্তরেরই ছাড়পত্র নেননি মালিকরা। ভাটাগুলো বছরের পর বছর ধরে পরিবেশ দূষিত করে চলছে। এর প্রভাবে আশপাশের কৃষিজমির ফলনও কমছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের পূর্ব রামনগর এলাকার এমবি ব্রিকসের চারপাশে বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও লিচু বাগান। আধা কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ক্ষতি হচ্ছে ফসলের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ইটভাটাটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শেখপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের। তিনি আত্মগোপনে থাকলেও তাঁর বাহিনী রয়ে গেছে। তাদের দাপট কমেনি। এ কারণে কৃষকের ক্ষতি হলেও মুখ খোলার সাহস নেই কারও। 
শুধু এই ইটভাটা নয়, দিনাজপুরের ২৪২টি ইটভাটার মধ্যে ১৭৬টিই অবৈধ। এসব ইটভাটায় নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এর মধ্যে সদর উপজেলাতে ১১টি, পার্বতীপুরে ৩২টি, কাহারোলে ৫টি, বীরগঞ্জে ২১টি, চিরিরবন্দরে ২৯টি, খানসামায় ৭টি, বোচাগঞ্জে ১৩টি, বিরামপুরে ৬টি, ঘোড়াঘাটে ৬টি, ফুলবাড়ীতে ১১টি, বিরলে ১৩টি, নবাবগঞ্জে ২১টি, হাকিমপুরে ১টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। 
এদিকে দেরিতে হলেও দিনাজপুরে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গত চার মাসে ১৬টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৮ এপ্রিল এক দিনেই সদর উপজেলার এসআরবি ব্রিকস, চিরিরবন্দরের এবি ব্রিকস, আরএস ব্রিকস, নিউ আরএস ব্রিকস, এসকে ব্রিকস, পার্বতীপুরের এসএইচবি ব্রিকস, এসআরবি-২ ব্রিকস, এমএসবি ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে ৪৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পরের দিন নবাবগঞ্জের হরিপুর এলাকায় এমএস ব্রিকসকে ১ লাখ ও এসএনএম ব্রিকসকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 
এর আগে গত ১০ মার্চ হাকিমপুরের মেসার্স আইপি ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ইটভাটার আগুন নিভিয়ে ও চুল্লিসহ চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়। ৯ মার্চ চিরিরবন্দরের মেসার্স আরএ ব্রিকসের এবং ৭ মার্চ নবাবগঞ্জের মেসার্স ডব্লিউআরএস ব্রিকসের চুল্লি ও চিমনি ভেঙে উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চিরিরবন্দরের আরকে ব্রিকস ও এমআর ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি বিরলে এইচআরবি ব্রিকসকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 
জরিমানার পাশাপাশি এসব ইটভাটার আগুন নিভিয়ে চুল্লি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। সহযোগিতা করেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, আনসারসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। 
দিনাজপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ ইট উৎপাদন করতে পারেন না। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটায় পর্যায়ক্রমে অভিযান চালানো হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইটভ ট সদর উপজ ল ব র কসক ইটভ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ