৬১ বছরের ‘চিরকুমার’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন
Published: 18th, April 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির ‘একরোখা নেতা’ হিসেবে পরিচিত দিলীপ ঘোষ আজ নিজের চিরকুমারের তকমা ঘোচাবেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনের বাসভবনে বিয়ে হবে। এ বিয়ে হবে অনাড়ম্বরভাবে। পাত্রী তাঁর দল বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কু মজুমদার।
দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঝাড়গ্রামে। এখন তিনি থাকছেন কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনের আবাসিক এলাকায়। বিয়ের অনুষ্ঠানে কিছু বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গ্রামের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থেকে সপ্তাহখানেক আগে দিলীপের মা চলে এসেছেন কলকাতায়। ছেলের সংসার গুছিয়ে তিনি পরে ফিরে যাবেন তাঁদের ঝাড়গ্রামের বাড়িতে।
বিজেপির অনেক নেতাই বলছেন, দিলীপ ঘোষ দেখিয়ে দিলেন রাজনৈতিক জীবনের মতো তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও একই রকম ‘কালারফুল’। তিন কাউকে রেয়াত দিয়ে কথা বলেন না। দিলীপ ঘোষ তিন মাস ধরে প্রেমে হাবুডাবু খাচ্ছিলেন।
দিলীপ ঘোষ বহু বছর আগে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসে নাম লিখিয়েছিলেন। তখন শপথও নিয়েছিলেন তিনি ‘অকৃতদার’ থাকবেন।
আরএসএস অবশ্য ২০১৪ সালে দিলীপ ঘোষকে বিজেপিতে পাঠায়। ২০১৫ সালেই পেয়ে যান পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ। ২০২১ সালে তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে লড়ে। পেয়ে যান ৭৭টি আসন। নতুন এক রেকর্ড গড়েন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়েছেন, লোকসভার সংসদ সদস্য হয়েছেন। হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা।
এই বিয়ে নিয়ে দিলীপ ঘোষ মুখ না খুললেও তাঁর হবু স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দিলীপদাকে বহুদিন ধরে চিনি। ওকে ভালোও লাগে। মনের কথা খুলে বলা যায়। গত সেপ্টেম্বরে তাঁকে প্রপোজ করেছিলাম। তিনি তিন মাস সময় চেয়েছিলেন। তারপর সেই সময় এসে গেল কিছুটা বিলম্বে।’
বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরী বলেছেন, ‘দিলীপদাকে অনেক শুভেচ্ছা। ওর দাম্পত্যজীবন অনেক সুখের ও সুন্দর হোক।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।