গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ১২৯তম প্রয়াণ দিবস আজ ১৮ এপ্রিল। ১৮৯৬ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। তার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে কুমারখালীর কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরে ছিল না কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন। উপজেলা প্রশাসন বা কোনো প্রেস ক্লাবের পক্ষেও ছিল না কোনো আয়োজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়কের আজ বিয়ে। এ কারণে ১৮ এপ্রিল দিনটি ঘিরে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল না জাদুঘরে। তবে, সেখানে অবস্থিত কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফুলের মালা দিয়েছেন জাদুঘরের কর্মচারীরা। 

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারখালী পৌরসভার কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নীরবতা। প্রধান গেটে ঝুলছে তালা। চত্বরে অবস্থিত ম্যুরালে ফুলের মালা ও পুষ্পস্তবক রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

ডিআরইউ সদস্য ও সন্তানদের দাবা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু

ডিআরইউতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

জাদুঘরের নিরাপত্তাকর্মী রুহুল আমিন বলেন, “জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক তাপস কুমার মন্ডল চলতি মাসের ৫ তারিখ যোগদান করেছেন। আজ শুক্রবার কাঙাল হরিনাথের প্রয়াণ দিবস। আজই স্যারের (তত্ত্বাবধায়ক) বিয়ে। সেজন্য, আলোচনা সভা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান পেছান হয়েছে। পরে করা হবে।” 

দিনটি ঘিরে কোনো আয়োজন না থাকায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাঙাল হরিনাথের চতুর্থ বংশধর স্বর্গীয় অশোক মজুমদারের স্ত্রী গীতা রানী মজুমদার। তিনি বলেন, “কাঙাল ভাঙিয়ে অনেকজন বড় লোক হয়েছেন। সেই কাঙাল কাঙালই আছে। কাঙালের মতোই যাচ্ছে তার তিরোধান দিবস।”

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন কাঙাল হরিনাথ। আজ কাঙালই বঞ্চিত। আমরাই সবচেয়ে বঞ্চিত, অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। অরক্ষিত কাঙালের সমাধি ও ব্যবহৃত তৈজসপত্র। প্রশাসন তো দূরের কথা সাংবাদিকরাও খোঁজ নেয় না।” 

গীতা রাণীর ছেলে দেবাশীষ মজুমদার বলেন, “সাংবাদিকরা কাঙালকে গুরু দাবি করেন। গুরুকে শুধু চার দেওয়ালের মধ্যে রেখে স্মরণ করলেই হবে না, কাঙালের সব অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করতে হবে।”

এ বিষয়ে জানতে কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক তাপস কুমার মন্ডলকে ফোন দেওয়া হয়। ফোনটি অন্য একজন রিসিভ করে বলেন, “তাপসের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। পরে কথা বলে নিয়েন।” 

কাঙাল হরিনাথের অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত জাদুঘর কর্তৃপক্ষ করে থাকে বলে ফোনে জানান কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, “অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

কাঙাল হরিনাথ ১৮৩৩ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কুন্ডুপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৬৩ সালের এপ্রিল মাসে কুমারখালী থেকে গ্রামবার্তা প্রকাশিকা নামের একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। তার স্মরণে কুমারখালীতে একটি স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ হয়েছে। তবে, অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে তার ভিটা ও সমাধি।

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ দ ঘর র অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হাদিকে গুলির ঘটনা আ.লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ: নাহিদ

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: নাহিদ 

নাহিদ ইসলাম বলেন, “হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ।”

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা দেখছি।”

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সব জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা, প্রশাসনিকভাবে প্রতিহত করা এবং ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলেছি।”

পতিতরা নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি পরিবেশ ফেরাতে হবে।”

নাহিদ বলেন, “আমরা সর্বাত্মকভাবে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখব বলেছি। হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”

এর আগে সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে তিনটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি অংশ নেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

এছাড়া এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ