কানাডায় ফেডারেল নির্বাচনের আগাম ভোট শুরু, এগিয়ে লিবারেল পার্টি
Published: 19th, April 2025 GMT
কানাডার স্থানীয় সময় শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ফেডারেল নির্বাচনের আগাম ভোট গ্রহণ। ভোট চলবে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট চলবে।
নির্বাচন কানাডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটাররা নির্ধারিত চার দিনের যেকোনো দিন তাদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। আগাম ভোটের সুবিধা গ্রহণ করে অনেকেই মূল নির্বাচনের দিন ভিড় এড়াতে চাইছেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা এই সময়ে আরও বেশি ভোটারকে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ভোটারদের ভোটার কার্ড ও একটি সরকার স্বীকৃত পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফেডারেল নির্বাচনের মূল ভোট গ্রহণ দিন নির্ধারিত রয়েছে এ মাসেই, ২৮ এপ্রিল। তবে আগাম ভোটারদের অংশগ্রহণ নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে কানাডার যেকোনো নির্বাচনের আগে ন্যাশনাল ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে নেতারা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে একে অপরের যুক্তি তুলে ধরে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুদিন দুটি ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি ফ্রান্স ভাষায়, অন্যটি ইংরেজি ভাষায়।
কানাডার যে কোনো জাতীয় নির্বাচন কিংবা ভবিষ্যৎ নির্বাচন এমনকি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে প্রধান নেতারা এ রকম বিতর্কে লিপ্ত হয় নির্বাচনের আগে। এবারের নির্বাচনে মাত্র ৩৬ দিনের প্রচারণায় দুটি বিতর্ক রাখা হয়েছে। দুদিনের বিতর্কে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল কানাডার অর্থনীতি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক। এই শুল্ক আরোপের ফলে কানাডার অর্থনীতিতে কি ধরনের প্রভাব পড়বে তাঁর বিশ্লেষণ। এই সকল সমস্যা কে ভালোভাবে সমাধান করতে পারবে, পাশাপাশি নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান নিয়েও আলাপ আলোচনা হয়েছে। এই দুই দিনের ভেতর ইমিগ্রেশন নিয়ে কোন আলাপ আলোচনা হয়নি। এবারের নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর প্রথম থেকেই ইমিগ্রেন্টদের নিয়ে তেমন কথাবার্তা বলা হয়নি। যদিও ইমিগ্রেশন পলিসিই দেশকে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দিয়েছে কিন্তু গত দু’দিনের আলোচনায় ইমিগ্রেশন পলিসির কোনো আলাপ হয়নি।
কানাডা এই মুহূর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। দলের নেতারা তাদের ভোটারদের কাছ থেকে ভোট পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে ভোটারদের মধ্য এক ধরনের দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজ করছে। শেষের এই সময়টার মধ্যে তারা মনস্থির করে ফেলেন কাকে ভোট দেবেন। এখন পর্যন্ত কোনো দল তাদের ইলেকশন ম্যানিফেস্টো এখনও প্রচার করেনি।
বিভিন্ন সংগঠনের জনমত জরিপের তথ্য উপাত্ত ও জরিপ সংগ্রহ করে ‘দ্য টরেন্টোস্টার দ্য সিগন্যাল’ একটি গড় জরিপ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে লিবারেল পার্টি ৪২.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?