রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের যুবকের লাশ ফেরত পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সহযোদ্ধার বরাত দিয়ে পরিবার জানিয়েছে, যে স্থানে নিহত হয়েছে, সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন হোসেনপুর গ্রামের মো. মোরশেদ মিয়ার ছেলে মো. আকরাম হোসেন। আকরামের এক সহযোদ্ধার ফোনে এ খবর জানার পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিহতের স্বজনদের মাঝে চলছে মাতম। তারা নিহতের লাশ ফেরত, আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন। তাদের দাবি, আর কোনো বাবা-মার বুক যেন এভাবে কেউ খালি করতে না পারে, সে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শনিবার দুপুরে নিহত আকরামের বাড়ি গিয়ে প্রায় ১০০-১৫০ গজ দূর থেকে কান্না শোনা যায়। বাড়ির সামনে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী বাবা মোরশেদ মিয়াকে শান্তনা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করছেন। তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে স্বাভাবিক কথা বলছেন। পরক্ষণে ছেলের কথা বলে হাউ-মাউ করে কেঁদে চলছেন। পাশে দাদা মো.

শহীদ মিয়াও নাতির কথা বলে কাঁদছেন।

আকরামের ঘরে গিয়ে দেখা গেছে, ভাতিজার ছবি হাতে নিয়ে বিলাপ করছেন ফুফু রেশমী বেগম। আকরামের মা মোবিনা বেগম চুপ করে বসে আছেন। তার চোখ-মুখ লাল। ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলে বিলাপ শুরু করেন, ‘আমার বাবার আর ঘুম ভাঙল না।’

বাবা মোরশেদ মিয়া জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। তখন পরিস্থিতি ভালো নয় বলে জানায়। সবার কাছে মাফ চায়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধার পর রাশিয়া থেকে এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম গত সোমবার নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা তখন মরদেহ দেখতে চাইলে তা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে বলেন, ‘যে স্থানে আকরাম নিহত হয়েছে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি আরো জানান, শনিবার বিকেলে সহযোদ্ধা ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাসিন্দা মিরাজ জানিয়েছেন, লাশ ট্র্যাক (অবস্থান সনাক্ত) করা গেছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অবস্থান করায় কাছাকাছি যাওয়া যাচ্ছে না।

লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. শামীম চৌধুরি জানান, এ ধরনের মৃত্যু কারো কাম্য নয়। নিহতের লাশ দেশের আনার ব্যবস্থা, দরিদ্র পরিবারটির ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানান, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র শ য় ইউক র ন য দ ধ সহয দ ধ আকর ম র ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

ইরান থেকে তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে ৬টি ভারতীয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে ভারতের ৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এসব প্রতিষ্ঠান ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। এতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যেসব ভারতীয় কোম্পানির ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হচ্ছে, অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

 

নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিগুলো তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এদের অধীন যেসব সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানা রয়েছে, তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানের ‘ছায়া নৌবহর’ ও বিশ্বব্যাপী মধ্যস্বত্বভোগীদের দমন করা, যারা ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান থেকে এই ধরনের পণ্য কেনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো তেহরানকে অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহ, হুথি বিদ্রোহী, হামাসসহ অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহায়তায় এবং যুদ্ধপরিস্থিতি উসকে দিতে। মার্কিন সরকারের মতে, ইরান সরকারের এই নীতিমালার কারণে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ছে এবং এতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় কোম্পানি ছাড়াও তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ