ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অভ্যুত্থানের পাঁচ মাসের মাথায় ১০ ডিসেম্বর চাকসু নীতিমালা প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২৬ জানুয়ারি ওই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেটি জমা পড়েনি। নির্বাচনের কোনো রূপরেখাও তৈরি হয়নি। এতে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা।

নির্বাচনের রূপরেখা ও নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণ হিসেবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ‘অজুহাত’ হিসেবে নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এ কারণে প্রায় প্রতিদিনই চলছে প্রস্তুতিমূলক সভা। এতে চাকসু নির্বাচনের সরব আলোচনায় ভাটা পড়েছে। তবে প্রশাসনের দাবি, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে চাকসুর নির্বাচন হতে পারে। আর আগামী তিন মাসের মধ্যে তৈরি হবে নির্বাচনের রূপরেখা।

নির্বাচনের রূপরেখা ও নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণ হিসেবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ‘অজুহাত’ হিসেবে নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসন চাকসু নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এখনো নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এ ছাড়া আগস্টের পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে না পারা, বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে না পারা, নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করতে না পারাসহ নানা কারণে মনে হচ্ছে বর্তমান প্রশাসন নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট সক্রিয় নয়।

এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে যে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়, সেখানে সপ্তম দাবি ছিল ‘দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ও ছাত্রসংসদ চালু করা’। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর আট মাস পার হয়েছে। এখনো দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়নি। ছাত্রসংসদ নির্বাচনের জন্য কোনো পথনকশা তৈরি করতে পারেনি প্রশাসন। অথচ বিষয়টির ওপর জোর দেওয়ার দরকার ছিল।

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে চাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়বার নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি।

চাকসু নির্বাচনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সমাবর্তন আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। এ বিষয়ে সমাবর্তনের পর কথা হবে। একই বিষয়ে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো.

কামাল উদ্দিন জানান, তাঁরা নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছেন। সমাবর্তনের পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে চাকসু নির্বাচনের রূপরেখা প্রস্তুত করা হবে। আর ডিসেম্বরের দিকে নির্বাচন আয়োজনের কথা ভাবছেন তাঁরা। তিনিও সমাবর্তন নিয়ে ব্যস্ততার কথা বলেছেন।

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে চাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়বার নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর ছাত্রসংগঠনগুলোর মুখোমুখি অবস্থান, কয়েক দফা সংঘর্ষ ও উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ক্যাম্পাসে উগ্র মৌলবাদী শক্তির ভূমিকাও দেখা যাচ্ছে। এতে গণতান্ত্রিক চর্চা ব্যাহত হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমাএখনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা হয়নি

চাকসু নির্বাচনসহ ৯ দফা দাবিতে গত জানুয়ারিতে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের’ ব্যানারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। পাশাপাশি প্রায় সব ছাত্রসংগঠনই চাকসু নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় চাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচনের বিষয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলেন। তবে ছাত্রসংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান প্রথম আলোকে বলেন, চাকসু নির্বাচনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আলোচনা করেনি। ফলে নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই। তবে নির্বাচনের আগে তাঁরা মামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার চান।

আলোচনার মাধ্যমে নীতিমালা সংশোধন চান ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তিনি বলেন, তাঁরা জুনের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছিলেন। কিন্তু সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য এটি পিছিয়ে গেছে। সমাবর্তনের পর এক থেকে দুই মাসের মধ্যে তাঁরা নির্বাচন চান। যদিও প্রশাসনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে মৌখিক আলোচনা হয়েছে।

চাকসু নির্বাচনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আলোচনা করেনি। ফলে নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই।বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান

বর্তমানে চাকসু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ক্যাম্পাসে উগ্র মৌলবাদী শক্তির ভূমিকাও দেখা যাচ্ছে। এতে গণতান্ত্রিক চর্চা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে শঙ্কা রয়েছে। দেশে নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর চাকসু নির্বাচন আয়োজন করা উচিত।’

১৯৯০ সালের সর্বশেষ চাকসু নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন শিক্ষাবিদ মুহাম্মদ সিকান্দার খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব তৈরি হয়। এই নেতৃত্ব পরে জাতীয় রাজনীতিতেও ভূমিকা রাখতে পারে। এ রকম উদাহরণ দেশে রয়েছে। ফলে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়া জরুরি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দিতে হবে। অর্থাৎ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী—দুই পক্ষের আস্থা আছে, এমন ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক অন ষ ঠ ত ম হ ম মদ হওয় র ক ন র পর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবি এখন ভাইরাল, সবাই চলে যাচ্ছেন ১৯৯০ দশকে

পুরোনো দিনের অনেক স্টাইল বারবার ফিরে আসে। কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাড়ি পরা অনেক নারীর দারুণ সব ছবি ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। বাস্তবে কেউ শাড়ি না পরেই এআই টুল ব্যবহার করে ১৯৯০ দশকের নারীদের মতো শাড়ি পরার ছবি প্রকাশ করছেন। রেট্রো লুকের এই ছবির জাদু দেখাচ্ছে গুগলের জেমিনি এআই টুল। জেমিনির ন্যানো বানানা টুলের মাধ্যমে ভিনটেজ শাড়ি এআই ট্রেন্ড এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সয়লাব। ভিনটেজ শাড়ি এআই প্রম্পট ব্যবহার করে বিভিন্ন ছবি তৈরি করছেন ব্যবহারকারীরা। ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রামে ভিনটেজ শাড়ি এআই ট্রেন্ড এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

যেভাবে তৈরি হচ্ছে শাড়ি পরা এআই ছবি

ন্যানো বানানা হলো গুগলের জেমিনি এআইয়ের একটি সৃজনশীল টুল। এই টুল ব্যবহারকারীরা সাধারণ ছবিকে নিজের মতো করে রূপান্তরিত করতে পারছেন। একটি ছবি প্রকাল করে বিস্তারিত প্রম্পট দিয়ে ব্যবহারকারীরা এআইকে বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করতে কমান্ড দিচ্ছেন। ন্যানো বানানার মাধ্যমে তৈরি ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মে। ছবি তৈরির জন্য প্রথমে জেমিনির ওয়েবসাইটে (https://gemini.google.com) ছবি আপলোড করতে হবে। তারপর ইংরেজিতে প্রম্পট লিখে দিতে হবে। বিভিন্ন ব্যবহারকারীর সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, আপাতত ইংরেজি কমান্ডে বেশ ভালো ছবি তৈরি করতে পারছে জেমিনির ব্যানানা টুল।

হঠাৎ ভাইরাল হলো কেন

২-৩ দিন ধরে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ১৯৯০ দশকের মতো করে শাড়ি পরার ছবি প্রকাশ করছেন। ফেসবুকে নিজের দারুণ সব ছবি প্রকাশ করছেন এনজিও কর্মী সুমাইয়া সুমি। তিনি জানান, ‘আমি এআই টুল দিয়ে শাড়ি পরা ছবি তৈরি করেছি। গুগলের জেমিনি টুল, ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি দিয়েই ছবি তৈরি করেছি। আমার ফেসবুকে মনিটাইজেশন চালু আছে। যে কারণে ট্রেন্ডিং কোনো বিষয়ে ছবি তুললে ভালো রিচ মানে ছবি অনেকের কাছে পৌঁছে যায়। শাড়ি পরা ছবিসহ স্কাই জাম্পিংয়ের ছবি, আগের সময়কার নারীদের মতো ছবি তুলেছি। আমাকে কেমন দেখাবে, তা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রম্পট ব্যবহার করে ছবি তৈরি করেছি। বেশ ভালোই লাগছে নিজেকে অন্যভাবে দেখতে। সময়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে এবং নতুন কিছু করা আমার একটি পছন্দের কাজ।’

আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ফাহিমা আহমেদ জানান, ‘ফেসবুকে মাঝেমধ্যেই দারুণ কিছু ট্রেন্ড দেখি। এবার জেমিনির ব্যানানা এআই টুল দিয়ে ছবি তৈরি করেছি। আমাদের কল্পনায় আমরা কেমন, তা এআই দিয়ে তৈরি করার চেষ্টার সুযোগ মিলছে। এআই আমাদের প্রম্পট অনুযায়ী আমি কীভাবে নিজেকে দেখতে চাই, তার একটা ছবি তৈরি করে দিচ্ছে। আমি যেমনটা নিজেকে কল্পনায় দেখছি, তা–ই এআই তৈরি করে দিচ্ছে। জেমিনি আপাতত ‘লিমিটেড’ সুযোগ দিচ্ছে এমনভাবে ছবি তৈরির জন্য।’

নতুন আঙ্গিক তৈরি করছে এআই

ক্লিনিক্যাল রিসার্চার সুমাইয়া আতিনা খান জানান, ‘আমি নানা আঙ্গিকে ছবি তৈরি করেছি। ভিন্ন ধরনের লুক দিয়েছি প্রম্পটকে, আর মজার মজার সব ছবি পেয়েছি। হাতে ফুল নিয়ে, ডানে–বাঁয়ে তাকিয়ে অনেক স্টাইল করে ছবি তৈরি করেছি। টিনএজার থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী নারীদের এমন ছবি তৈরি করতে দেখছি। এখানে একটা বিষয় হচ্ছে, আমরা যাঁরা ছবি তৈরি করছি, তাঁরা যেভাবে লিখছেন সেইভাবেই এআই ছবি তৈরি করছে। এআই আমাদের কল্পনাকে কমান্ডের মাধ্যমে অনুসরণ করছে। এআই ও মানুষের দারুণ এক সংযোগ হচ্ছে এই ভাইরাল ট্রেন্ড। অনেক ব্যবহারকারীরা এত দিন এআই টুলস ব্যবহার থেকে দূরে ছিলেন, তাঁরা এই ট্রেন্ডের জন্য কিছুটা হলেও এআই ব্যবহারের চেষ্টা করছেন।’

নিজেকে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ দিচ্ছে এআই

মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট বা আধেয় ভাইরাল হয়। অধিকাংশ ভাইরাল ট্রেন্ড ইউরোপ বা আমেরিকাতেও বেশ আলোড়ন তৈরি করে। এবারে এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবির ভাইরাল ট্রেন্ড দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। যাঁরা শাড়ি চেনেন, সেই সব জনগোষ্ঠীর কাছে এই ট্রেন্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থাকেন চিকিৎসক রেহনুমা আবদুল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যেখানে থাকি, সেখানে কর্মব্যস্ততার কারণে শাড়ি পরা হয় না। আমি দেশে থাকতে বাসাতে শাড়ি পরতাম। প্রায় দুই বছরের জন্য শাড়ি পরা হচ্ছে না। এখানে সেই সুযোগ বা সংস্কৃতি নেই। এআই আমাকে অন্যভাবে সাজার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি বেশ কয়েকটি ছবি তুলেছি। নানা রঙের শাড়ি, নানা রঙের আলোতে। কোনোটায় খোঁপায় ফুলও আছে। এটা বেশ অবাক লাগে আমার কাছে, এআই অবিকল একজন মানুষের ছবি তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন প্রম্পট ব্যবহার করে নিজের সুন্দর সব ছবি তৈরি করেছি। আমি শাড়ি পরতে অনেক পছন্দ করি। যেকোনো নারীকে শাড়িতে সুন্দর লাগে বলে সবাই এই ট্রেন্ডের দিকে ঝুঁকছেন। বিভিন্ন প্রম্পট ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ছবি তৈরি করছি। বেশ আশ্চর্যজনক কাজই করছে এআই!’

আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ফ্যাশন ডিজাইনার নিশাত আনজুম জানান, ‘সাধারণ সময়ে আমাদের দেখতে যেমন লাগে, এআই সেই দেখার আঙ্গিকে পরিবর্তন আনছে নতুন এই ট্রেন্ডের মাধ্যমে। এখনকার জেন-জি প্রজন্ম ১৯৯০ দশকে নিজেদের রেট্রো লুকে কেমন লাগত, তা জানতে জেমিনি এআই টুলস ব্যবহার করছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, সাজগোজ কিংবা স্টাইলের জন্য অনেক সময় দিতে হয়, এখন ব্যস্ত জীবনে সেই সময় বা সুযোগ অনেক কম। এই সুযোগে এআই ব্যবহার করে নিজেকে কেমন লাগবে, তা দেখার চেষ্টা করছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবি এখন ভাইরাল, সবাই চলে যাচ্ছেন ১৯৯০ দশকে