পরীক্ষার সময় সন্তানকে যেভাবে শান্ত রাখবেন
Published: 20th, April 2025 GMT
পরীক্ষা মানেই অতিরিক্ত চাপ; হোক সেটা ক্লাসের সারপ্রাইজ টেস্ট অথবা বোর্ড পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীর মনে পড়াশোনা নিয়ে চাপ থাকে সব সময়। তবে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শুধু সন্তানেরাই দেয় না, তাদের সঙ্গী হন মা–বাবাও। সন্তানের খেয়াল রাখা, ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে কি না, সুবিধা-অসুবিধা, সব দিকে আলাদা নজর রাখেন তাঁরা। তবে অনেক সময় দেখা যায়, সন্তানের পড়াশোনার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। এসএসসি পরীক্ষা চলছে। তাই জেনে রাখুন, এ ধরনের চাপ সামলাতে কী করবেন।
বাড়তি চাপ দেবেন নাপরীক্ষা ও পড়াশোনা নিয়ে আপনার সন্তান ইতিমধ্যে বেশ চাপে আছে। সেখানে নতুন করে কোনো চাপ যোগ করবেন না। পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, কিংবা ফল খারাপ হলে কী হবে; এসব কথা বলে তার মনোবল ভেঙে দেবেন না। মা–বাবাই সন্তানের কাছে সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা। সেখান থেকে বাড়তি চাপ এলে তা সামলানো কঠিন; বরং তাকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করুন। উৎসাহ দিন। যাতে সে বাইরের চাপে ভেঙে না পড়ে।
আরও পড়ুনপাস করে শেখা যায় না: শীর্ষেন্দু২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩পড়ার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিনঅনেক চাপের মধ্যে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া বেশ কঠিন। এ জন্য প্রয়োজন স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ। বাড়তি কোলাহলবিহীন শান্ত পরিবেশ, যেখানে পরীক্ষার্থী আরামে পড়াশোনা করতে পারবে। মনোযোগ কেড়ে নিতে পারে, এমন যেকোনো ঘটনা বা যন্ত্র থেকে তাকে দূরে রাখুন। একেকজনের পড়াশোনার ধরন একেক রকম। কেউ নিরিবিলি পড়তে ভালোবাসে, কেউ গান শুনতে শুনতে, কেউ আবার উচ্চ স্বরে। আপনার সন্তানের যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য, সেভাবে পড়ার পরিবেশ দিন।
ভালো খাওয়াদাওয়াপরীক্ষার অতিরিক্ত চাপ অনেকে সামাল দিতে পারে না। সেই চাপ থেকে পেটের সমস্যা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। পেটের ওপর যাতে অতিরিক্ত কোনো চাপ না পড়ে, সেই খেয়াল রাখুন। পরীক্ষা চলাকালে বাইরের খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করুন। সন্তান যেসব খাবার পছন্দ করে, সেসব রান্না করতে পারেন; তবে স্বাস্থ্যকর যে হতে হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্তানের শরীরে যাতে পানির অভাব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে পেট ভালো থাকবে। আর পেট ভালো তো মনও শান্ত।
পজিটিভ প্যারেন্টিংঅতিরিক্ত চাপ সামলাতে দরকার হয় বাড়তি উৎসাহের। যে কারণে সন্তানকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিন। যাতে সে দমে না যায়। মা–বাবার কাছ থেকে ইতিবাচক সমর্থন পেলে সন্তানও মনোযোগী হয়ে ওঠে। ভালো ফল করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সন্তান যাতে আপনাকে বন্ধু মনে করে, তার মনের কথা ঠিকভাবে খুলে বলতে পারে, এমন পরিবেশ তৈরি করুন।
আরও পড়ুনসন্তানকে পরীক্ষায় ভালো ফল করতে যেভাবে সাহায্য করবেন০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪সার্বিক খেয়াল রাখুনপরীক্ষা মানেই শুধু পড়াশোনা নয়। পরীক্ষায় ভালো করতে প্রয়োজন সুস্থ মস্তিষ্কের। খেয়াল রাখুন, যাতে সন্তান পড়াশোনার চাপে নাওয়া-খাওয়া ভুলে না যায়। সঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া, ঘুম ও বিরতি নিশ্চিত করুন। মন ভালো রাখতে, চাপমুক্ত থাকতে বিনোদনেরও প্রয়োজন আছে। সেটি নিশ্চিত করুন। সাহায্যের জন্য যদি কোনো টিউটর থাকেন, তিনি কীভাবে পড়াচ্ছেন, তার খোঁজও রাখুন।
পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি রাখুনপরীক্ষার সময় সন্তানের যাতে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়, সেসব বিষয়ে খেয়াল রাখুন। কীভাবে পরীক্ষার হলে যাবে; কলম, পেনসিল ঠিক আছে কি না, প্রবেশপত্রের ফটোকপি করে রাখা হয়েছে কি না, এসব ব্যাপারে যাতে সন্তানের কোনো সমস্যা না হয়, সেটি নিশ্চিত করুন। পরীক্ষার সময় তার যেন পরীক্ষা ছাড়া আর কোনো চিন্তা না থাকে।
আরও পড়ুনদুই টিনএজ সন্তানের সিঙ্গেল মা আমি, যেভাবে সামলাচ্ছি ওদের১৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন পর ক ষ পর ক ষ র পর ক ষ য় পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক
একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।
যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষকচৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।
যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।
তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।
দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী