বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (পারভেজ) হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রদল পরিকল্পিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য দাবি ও গণ–অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মকে কলঙ্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে ছাত্রদল।

রোববার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উমামা ফাতেমা এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই অপবাদ আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগ্রামকে সন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে যারা দমন করতে চায়, তারাই প্রকৃত অর্থে সহিংসতার পৃষ্ঠপোষক।’

এর আগে রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ও প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জড়িত। ছাত্রদলের এমন অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ হাসাহাসিকে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ২২ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীর বাড়ি ময়মনসিংহে। এ হত্যার ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা হয়েছে। ছাত্রদলের ভাষ্য, জাহিদুল ইসলাম তাদের সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি ঘৃণ্য রাজনৈতিক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ, প্রকৃত অপরাধী ও ক্যাম্পাসে সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে থাকা বাস্তব চিত্রকে আড়াল করে তারা ঘটনার রাজনৈতিক ব্যবচ্ছেদে মনোযোগী হয়েছে। এমনকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণ–অভ্যুত্থানের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে এই হত্যার মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে যাচ্ছে। আমরা এই রাজনৈতিক অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুনজাহিদুল হত্যা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ নেতাকে দায়ী করলেন ছাত্রদল সভাপতি৭ ঘণ্টা আগে

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে উল্লেখ করে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে, একই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যেন কোনো নিরীহ শিক্ষার্থী রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার না হয়। তদন্ত হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং প্রমাণভিত্তিক, যেখানে কোনো রকম রাজনৈতিক চাপ বা প্রভাব খাটানো যাবে না।

যেহেতু ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থী হত্যার মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপস্থিত সকলকে তা তারা যে সংগঠনেরই হোক, তদন্তের আওতায় আনা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ–অভ্যুত্থান সেলের সম্পাদক হাসান ইমাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য সিনথিয়া জাহিন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক এম জে এইচ মঞ্জু প্রমুখ।

আরও পড়ুনহাসাহাসিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে হত্যা১৯ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ হ দ ল ইসল ম ক ন দ র কর ছ ত রদল র র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটিতে আনার এবং মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন দেশের তরুণ চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শতাধিক তরুণ চিকিৎসক অংশ নেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, সিগারেটের চার স্তরের মূল্যব্যবস্থা—নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম—তামাক কর নীতিকে দুর্বল করছে। নিম্ন ও মধ্যম স্তর একীভূত করে দাম বাড়ালে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও তরুণ প্রজন্ম ধূমপান থেকে বিরত থাকবে। 

তরুণ চিকিৎসকরা নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চ স্তরে ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা, প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ অপরিবর্তিত রাখার কথা বলেছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণে বিড়ি ও অন্যান্য তামাকপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিরও সুপারিশ করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হার্ট ফাউন্ডেশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. অরুনা সরকার ও সিনিয়র কমিউনিকেশন অফিসার আবু জাফর এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা ডা. আয়েশা সিদ্দিকা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ