বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়া বেঙ্গল টাইগার বা ডোরাকাটা বাংলার বাঘের একসময় বিচরণভূমি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম। পাশাপাশি ছিল চিতা বাঘও। নানা ঐতিহাসিক দলিল ও বইপত্রেও পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের উপস্থিতির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী বিবরণ রয়েছে ১৯০৬ সালে কলকাতার ‘দ্য বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট বুক ডিপো’ থেকে প্রকাশিত তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের ইংরেজ প্রশাসক আর এইচ স্নেইড হাচিনসনের ‘এন অ্যাকাউন্ট অব দ্য চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট’ বইয়ে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে হাচিনসন লিখেছেন, ‘১৯০১ সালের বড়দিন ছিল সেদিন। আমি জঙ্গলে ঢুকেছি বনমোরগ শিকারে। হঠাৎ দেখলাম যেখানে দাঁড়িয়ে আছি আর কিছু দূরেই পাহাড় থেকে একটি বাঘ নেমে আমার দিকেই আসছে। এটি ১৫০ ফুটের মধ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমি শটগান রেখে রাইফেল নিয়ে গুলি ছুড়লাম। এর আগে আরও একদিন বাঘের মুখোমুখি হয়েছি।’

২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা ‘টাইগার কান্ট্রি? সায়েন্টিস্ট আন কভার ওয়াইল্ড সারপ্রাইজ ইন ট্রাইবাল বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সচিত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জেরেমি হেন্সের লেখা ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অজ্ঞাত একটি বনে (সংরক্ষণের স্বার্থে বনটির নাম উল্লেখ করা হয়নি) গবেষকদের চালানো বন্য প্রাণী জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) পরিচালিত ওই জরিপে গাছের গায়ে ক্যামেরা ফাঁদ লাগিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় বন্য প্রাণীদের ছবি ও বিচরণের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়েছে, এমন অনেক প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায় সেই গবেষণায়। গাউর, মার্বেল ক্যাট, সম্বর হরিণ, গয়াল, সূর্যভালুক, ঢোল (বন্য কুকুর), আরাকান ফরেস্ট টার্টল নামের বিরল কচ্ছপের সন্ধান পেয়েছিলেন ওই গবেষণায়।

প্রতিবেদনটিতে বন্য প্রাণী গবেষক ও সিসিএর সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার সিজার রহমান, ইশতিয়াক সোবাহান ও বাঘবিশেষজ্ঞ মনিরুল এইচ খানের বক্তব্য নেওয়া হয়। গবেষণার একপর্যায়ে গবেষক দল ১৩ সেন্টিমিটারের বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায়। পায়ের ছাপের ছবি বাঘবিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়ে তাঁরা সে বিষয়ে নিশ্চিতও হন।

গবেষক মনিরুল এইচ খান ‘গার্ডিয়ান’-এ বলেছিলেন, তাঁর ধারণা, ওই এলাকায় ১৫টির মতো বাঘ এখনো বিচরণ করছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বনে স্থানীয় বনজীবীদের সহায়তায় বন্যপ্রাণী শনাক্তে গাছের গায়ে লাগানো হচ্ছে ক্যামেরা ফাঁদ। ২০১৬ সালের ১ মার্চ শাহরিয়ার সিজার রহমানের তোলা এই ছবিটি প্রকাশিত হয় যুক্তরাজ্যের দা গার্ডিয়ান পত্রিকায়।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলায় আগামী ১৮ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করেছেন।

জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ২০১৬ সালে গাজীপুরের জয়দেবপুরে সাতজনকে হত্যার মামলায় জাবেদ পাটোয়ারীসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গত ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তখন প্রসিকিউশন বলেছিল, ২০১৬ সালে মাদ্রাসাপড়ুয়া সাত ছাত্রকে গুম করা হয়। পরে গাজীপুরের জয়দেবপুরে একটি বাড়িতে বাইরে থেকে তাদের তালাবদ্ধ করা হয়। জঙ্গি অভিযোগ চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করা হয়।

গুমের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল

গুমের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল–১।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল