এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তরে আহ্বায়ক কমিটি, নেতৃত্বে আরিফুল-আমিরুল
Published: 17th, November 2025 GMT
ঢাকা মহানগর উত্তরে আহ্বায়ক কমিটি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা আরিফুল ইসলাম আদীবকে। আর সদস্যসচিব হয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা সর্দার আমিরুল ইসলাম।
সোমবার এই কমিটি প্রকাশ করেছে এনসিপি। ঢাকা মহানগর উত্তরের ৭১ সদস্যের কমিটিতে কাজী সাইফুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, সাদিয়া ফারজানাকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব এবং মোস্তাক আহমেদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটিতে ৮ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ৮ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ১১ জনকে সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ৩৯ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তরের এই কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া আরিফুল ইসলাম দলটির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য এবং রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থীকে এখন অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক করা হলো।
মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব পদে মনোনীত সর্দার আমিরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি একসময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি এনসিপিতে যোগ দেন।
এই কমিটিতে এক নম্বর সদস্য হয়েছেন আকরাম হুসেইন। তিনি এর আগে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটিরও সদস্য হয়েছিলেন আকরাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব র সদস য ল ইসল ম কম ট ত কম ট র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ