ফেরি সার্ভিস বন্ধে ক্ষুব্ধ সন্দ্বীপবাসী, বন্ধ করা হবে না বলে আশ্বাস উপদেষ্টার
Published: 23rd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে চালু হওয়া ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। তারা বলেন, একটি সিন্ডিকেট আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও অন্যান্য সময়ে ফেরি চালু রাখার দাবি জানান তারা। এছাড়া সিট্রাক দিতে মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ তা অমান্য করে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সন্দ্বীপবাসী মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
এদিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে কথা হয়েছে। ফেরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেরি তুলে নেওয়ার আগেই বিকল্প সিট্রাক দেওয়া হবে। পন্টুনও কোথাও সরানো হচ্ছে না।’
গত ২৪ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ সমুদ্র পথে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছয়জন উপদেষ্টা ও দুইজন বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখে প্রধান উপদেষ্টাও। এতে উচ্ছ্বসিত হন যাতায়াতে দীর্ঘদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। গত ২০ এপ্রিল এই রুটে ফেরি সার্ভিস সাময়িক বন্ধের একটি আদেশ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধের কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সামুদ্রিক এই রুটে ফেরিটি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স›দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর থেকে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা, এই রুটে চলাচলরত কপোতাক্ষ ফেরি ও পন্টুন সরিয়ে না নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যদি ফেরি বন্ধ করে, আমাদের লাশের উপর দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমরা ফেরি এখান থেকে যেতে দেবো না। ফেরি এখানে থাকবে। প্রতিকূল পরিবেশে বন্ধ রাখা হলেও অনুকূল পরিবেশে যেন ফেরি চলাচল চালু থাকে।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘আগে লাল বোটের মাধ্যমে যাতায়াতে অনেক লোক হতাহত হয়েছেন। আমরা চাই নিরাপদ যাত্রীবাহন ফেরি যেন চালু থাকে। একটি সিন্ডিকেট আমাদের ফেরি বন্ধের চক্রান্ত চালাচ্ছে। যেটা আমরা কখনও হতে দেবো না। আমরা চাই চক্রান্ত মুক্ত করে যাতায়াতের সুব্যবস্থা যেন অব্যাহত থাকে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
সুদানে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ছাত্রশক্তির জাবি শাখার উদ্যোগে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
মানববন্ধনে জাবি শাখার যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, “আমরা মনে করছি, সুদানকে ফিলিস্তিনের গাজায় পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। বিশ্ব মানবতা যেভাবে গাজাবাসীর পক্ষে কথা বলে, কিন্তু আফ্রিকার দেশ হওয়ায় আমরা সুদানের মানুষদের পক্ষে কথা বলছি না। আজ বিশ্ব মিডিয়া, জাতিসংঘ ও ওআইসি নিরব। ফলে আরব আমিরাতের ফান্ডিংয়ে সেখানে নির্বিচারে মানুষ মারা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় সেখানকার (আরব আমিরাতের) বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তারা এখনো কারাভোগ করছে। বাংলাদেশ সরকারকে বলব, আমাদের দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে সুদানে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিবৃতি দিতে হবে।”
শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ছাড়াও মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
 
অন্যদিকে, রবিবার (২ নভেম্বর) ভাষ্কর্য চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিউম্যান রাইটস সোসাইটির মানবাধিকার কর্মীরা গণহত্যা বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, “নানা কারণে বিভিন্ন দেশের সংঘাত থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধে বলি হয় নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ। সুদানে যে জাতিগত নিধন চলছে, তা নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। মানবতা কোনো ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। সব মজলুমের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একজন মানুষের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান বজায় রাখবে।”
এ সময় সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস, সদস্য নিং ম, ফয়সাল মাহমুদসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আহসান/লিমন/মেহেদী