ব্রাজিলের এক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার ভিনিসিয়াস জুনিয়রের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। অভিযোগের সত্যতা মিললে দুই বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে পারেন তরুণ ফুটবলার ভিনি।

সংবাদ মাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, ভিনিসিয়াসের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একাধিক পেশাদার ক্লাবের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি নাকি ব্রাজিল ও পর্তুগালের ক্লাবের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত আছেন। পেশাদার ফুটবলার একাধিক ক্লাবের মালিকানা নিলে তা স্বার্থ দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে বড় সাজা দেওয়ার এখতিয়ার রাখে ফিফা।

বিষয়টির বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ মাধ্যম উল্লেখ করেছে, ব্রাজিলিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘টাইবেরিস হোল্ডিং দো ব্রাজিল’ গত ৭ এপ্রিল ফিফার ফুটবল বিষয়ক নৈতিক কমিটির কাছে ভিনিসিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- ভিনিসিয়াস ব্রাজিলের ‘অ্যাথলেটিক ক্লাব দে সাও জোয়াও দেল রেই’ এবং পর্তুগালের ‘আলভের্কা’ ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- ভিনিসিয়াস তার বাবার প্রতিষ্ঠান ‘অল এজেন্সিয়ামেন্টো স্পোর্তিভো’র মাধ্যমে ক্লাবগুলো পরিচালনা করেন বা অর্থায়ন করেন। অর্থাৎ ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নাও থাকতে পারেন তিনি। তবে ফিফার নিয়মে বলা আছে- সরাসরি বা পরোক্ষভাবে একাধিক ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না কোন পেশাদার ফুটবলার।

বিষয়টি নিয়ে ফিফার বিধির ২০ ও ২২ নম্বর ধারায় বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া আছে। ওই দুই ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্বার্থ দ্বন্দ্বের এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভিনি সাজা পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা দুই বছর পর্যন্ত হতে পারে। মার্কা দাবি করেছে, ফিফা এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

ভিনির বিরুদ্ধে স্বার্থ দ্বন্দ্বের খবর দেওয়ার সঙ্গে স্প্যানিশ আউটলেট মার্কা আরও একটি খবর দিয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে নতুন চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়ে গেছে ভিনির। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি ছিল তার। ওই চুক্তি বাড়িয়ে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। এতে করে আপাতত ভিনির প্রতি সৌদি ক্লাবের আগ্রহের খবরটি চাপা পড়ছে। তিনি ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ