কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ছুরিকাঘাতে নুরুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নুরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করা হয়। আজ বুধবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সৈয়দুল আমিন ওরফে কালা সোনা মিয়া নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত নুরুল ইসলাম উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোসেন।

আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, মাদক কেনাবেচা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আশ্রয়শিবিরের আমগাছতলা এলাকায় সালেহ নামের একজন রোহিঙ্গা মুদিদোকানি নুরুল ইসলামকে ডেকে নেন। এ সময় শিবিরের বাসিন্দা নুরুল আজিম (৩০), সৈয়দুল আমিন (৪০), মো.

সাদেক (২০), মো. কায়সার (১৯) ও মুদিদোকানি সালেহ নুরুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।

খবর পেয়ে আহত নুরুল ইসলামের বড় ভাই মো. রিদোয়ান (২৭) এবং বন্ধু মো.ফারুক (২২) তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে হামলাকারীরা তাঁদেরও কুপিয়ে জখম করেন। আহত তিনজনকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। গুরুতর আহত নুরুল ইসলাম আজ বুধবার ভোররাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তিনি আরও বলেন, নুরুল ইসলামের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সৈয়দুল আমিনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ