সিলেট অঞ্চলে ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রম শুরু
Published: 24th, April 2025 GMT
চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট অঞ্চল থেকে ধান-চালের ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ধান ও চাল ক্রয় কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘ধান-চাল কেনা নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট হবে না। বিগত আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে কোনো সিন্ডিকেট ছিল না, বোরো ধান সংগ্রহেও কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। বিগত সরকারে আমলে কী হয়েছে না হয়েছে, তা আমার জানা নেই। এখন কোনো সিন্ডিকেটের অস্থিত্ব থাকবে না। সরকারি সভার মাধ্যমে অনেক বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করে ধান চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এবার সিলেট অঞ্চল থেকে ৩২ হাজার ৪৬৩ টন ধান ও ৫২ হাজার ১৫১ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তর থেকে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।
লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণের আশাবাদ জানিয়ে সিলেট আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বোরো মৌসুমে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া গত বছর আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হলেও ধান কেনা হয়েছে ৬৬ ভাগ। এবার লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে কম। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তাই কৃষকদের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ ধান কেনা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট জেলায় ৫ হাজার ৫৫০ টন, সুনামগঞ্জে ১৪ হাজার ৬৪৫ টন, হবিগঞ্জে ৮ হাজার ২৫২ টন এবং মৌলভীবাজারে ৪ হাজার ১১ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে সিলেট অঞ্চলের চার জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ২১৯ হেক্টর জমিতে। এ অঞ্চলে ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৭ টন ধান উৎপাদন হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধ ন স গ রহ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।