পিএসসি: বৈষম্য নিরসন করে সমতা নিশ্চিতের দাবি সারজিস আলমের
Published: 25th, April 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, যাঁরা আজকে পিএসসিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন, বিগত ১৬ বছরে তাঁরা নিজেদের বৈষম্যের শিকার দাবি করতেন এবং এই অভ্যুত্থান না হলে তাঁরা কখনো এই গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতেন না। তাহলে ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে গিয়ে সবার আগে তাঁদের বৈষম্যগুলো নিরসন করে সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
সারজিস আলম বলেন, সেই জায়গায় তাঁরা যদি আগের চক্রটাকে আবার আঁকড়ে ধরে চলতে থাকেন তাহলে এই অভ্যুত্থানের যে কাঙ্ক্ষিত চাওয়া সেটা তাঁরা কখনো পূরণ করতে পারবেন না।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে পিএসসি সংস্কারের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ কথাগুলো বলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি আমাদের ভাইয়েরা যৌক্তিক চাওয়া নিয়ে পিএসসির সামনে গিয়েছিল। আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে তাদের ডেকে নিয়ে তাদের কথা শুনতে পারতেন। আপনাদের কথাগুলো বলতে পারতেন। কিন্তু তাদের গায়ে হাত দেওয়ার মতো স্পর্ধা আপনারা কোথায় পান?’
সারজিস আলম বলেন, ‘যে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আমরা আঠারোতে, চব্বিশে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি, সেই সহযোদ্ধাদের চব্বিশের এত বড় একটা অভ্যুত্থানের পরে আবার কেন এখানে পিএসসি সংস্কারের দাবিতে বসতে হব? যেখানে পিএসসিকে সামনে রেখে, কোটাব্যবস্থাকে সামনে রেখে একটা আন্দোলন শুরু হলো, অভ্যুত্থান হলো, সেখানে অভ্যুত্থান–পরবর্তী সরকারের অন্যতম কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে একটা ছিল চাকরিপ্রত্যাশীদের যত ধরনের সমস্যা আছে সেগুলোর সমাধান করা।’
অন্তর্বর্তী সরকার ও পিএসসির কাছে কিছু প্রশ্ন রয়েছে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বেশ কিছু পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়ে পাস করেছেন। এটা সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে এসেছে। যাঁরা ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের সঙ্গে জড়িত তাঁদের ইনভেস্টিগেশনের মাধ্যমে এসেছে যে কয়েক শ পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়ে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করেছেন।
সারজিস বলেন, ‘তাহলে যারা প্রশ্ন পেয়ে পাস করল তাদের সেখান থেকে ফাইন্ড আউট (খুঁজে বের করা) করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্বে কীভাবে ওই ৪৬তম বিসিএসের রিটেন পরীক্ষা হতে পারে? যাদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে প্রাথমিক পরীক্ষায় সুযোগ মিলেছে, তাদের সঙ্গে যদি মেধার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের একই পরীক্ষায় বসানো হয়, তাহলে নৈতিক জায়গা থেকে মেধার ভিত্তিতে যারা টিকেছে তারা ওই পরীক্ষায় বসতে পারে না।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ