জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, যাঁরা আজকে পিএসসিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন, বিগত ১৬ বছরে তাঁরা নিজেদের বৈষম্যের শিকার দাবি করতেন এবং এই অভ্যুত্থান না হলে তাঁরা কখনো এই গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতেন না। তাহলে ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে গিয়ে সবার আগে তাঁদের বৈষম্যগুলো নিরসন করে সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

সারজিস আলম বলেন, সেই জায়গায় তাঁরা যদি আগের চক্রটাকে আবার আঁকড়ে ধরে চলতে থাকেন তাহলে এই অভ্যুত্থানের যে কাঙ্ক্ষিত চাওয়া সেটা তাঁরা কখনো পূরণ করতে পারবেন না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে পিএসসি সংস্কারের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ কথাগুলো বলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি আমাদের ভাইয়েরা যৌক্তিক চাওয়া নিয়ে পিএসসির সামনে গিয়েছিল। আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে তাদের ডেকে নিয়ে তাদের কথা শুনতে পারতেন। আপনাদের কথাগুলো বলতে পারতেন। কিন্তু তাদের গায়ে হাত দেওয়ার মতো স্পর্ধা আপনারা কোথায় পান?’

সারজিস আলম বলেন, ‘যে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আমরা আঠারোতে, চব্বিশে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি, সেই সহযোদ্ধাদের চব্বিশের এত বড় একটা অভ্যুত্থানের পরে আবার কেন এখানে পিএসসি সংস্কারের দাবিতে বসতে হব? যেখানে পিএসসিকে সামনে রেখে, কোটাব্যবস্থাকে সামনে রেখে একটা আন্দোলন শুরু হলো, অভ্যুত্থান হলো, সেখানে অভ্যুত্থান–পরবর্তী সরকারের অন্যতম কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে একটা ছিল চাকরিপ্রত্যাশীদের যত ধরনের সমস্যা আছে সেগুলোর সমাধান করা।’

অন্তর্বর্তী সরকার ও পিএসসির কাছে কিছু প্রশ্ন রয়েছে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বেশ কিছু পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়ে পাস করেছেন। এটা সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে এসেছে। যাঁরা ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের সঙ্গে জড়িত তাঁদের ইনভেস্টিগেশনের মাধ্যমে এসেছে যে কয়েক শ পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়ে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করেছেন।

সারজিস বলেন, ‘তাহলে যারা প্রশ্ন পেয়ে পাস করল তাদের সেখান থেকে ফাইন্ড আউট (খুঁজে বের করা) করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্বে কীভাবে ওই ৪৬তম বিসিএসের রিটেন পরীক্ষা হতে পারে? যাদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে প্রাথমিক পরীক্ষায় সুযোগ মিলেছে, তাদের সঙ্গে যদি মেধার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের একই পরীক্ষায় বসানো হয়, তাহলে নৈতিক জায়গা থেকে মেধার ভিত্তিতে যারা টিকেছে তারা ওই পরীক্ষায় বসতে পারে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ