পাবনায় চাঁদা না পেয়ে একটি গেঞ্জি তৈরির কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ২১ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার হিমাইতপুর ইউনিয়নের চর শিবরামপুর গ্রামে এ ঘটে। হামলাকারীরা কারখানা থেকে প্রায় ১ লাখ টাকার গেঞ্জি নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কারখানার মালিক ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম প্রামাণিক (২৯) বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে গতকাল শুক্রবার পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেছে।

মামলার আসামিরা হলেন চর শিবরামপুর গ্রামের মঞ্জু সরদারের ছেলে মো.

নূর (২৫), মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশরাফ হোসেন (৪০), মিন্টু প্রামাণিকের ছেলে মিঠু (৩০) এবং খালেক সরদারের ছেলে জিয়া (৩৮) ও জান্নাত (৪০)।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, নিজ বাড়ির পাশে তাঁর গেঞ্জি তৈরির একটি কারখানা আছে। সম্প্রতি আসামিরা কারখানায় এসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। বাদী চাঁদা না দেওয়ায় ২১ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটার দিকে আসামিরা কারখানায় হামলা করেন। তাঁদের হাতে পিস্তল, হকিস্টিক, চাপাতি, লোহার রডসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তাঁরা কারখানা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান এবং প্রায় এক লাখ টাকার গেঞ্জি লুট করে নিয়ে যান।

মামলার বাদী রবিউল ইসলাম প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সাধারণ ব্যবসায়ী। কারও সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। শুধু চাঁদার জন্যই এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীদের মাঝেমধ্যে গ্রামে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, গ্রামটিতে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে। ওই বিরোধের জেরে কয়েক দিন আগে একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। ওই ঘটনায়ও থানায় একটি মামলা হয়েছে। এর জেরে ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের কারখানায় হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দুটি মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ