সারা বিশ্বে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে নানা মাত্রায় ভূমিকম্প হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া গেলেও ভূমিকম্পের নির্ভুল সতর্কবার্তা পাওয়া যায় না। তাই ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্কে থাকেন অনেকেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে পরিচিতি পেলেও ভূমিকম্প নিয়ে নতুন এক গবেষণা সবাইকে চমকে দিয়েছে। বুলেটিন অব দ্য সিসমোলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, কিছু ভূমিকম্প আসলে গোপন ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির ভূকম্পবিদদের পরিচালিত এ গবেষণায় বলা হয়েছে, উন্নত সংকেত শনাক্তকারী প্রযুক্তির মাধ্যমে মাটির নিচের বিস্ফোরণ শনাক্ত করা যায়। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষা প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের মতো ভূমিকম্পের সংকেত তৈরি করতে পারে, যা ভূমিকম্প শনাক্ত কার্যক্রমকে কঠিন করে তুলছে।

আরও পড়ুনস্মার্টফোনে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা পাবেন যেভাবে২৮ মার্চ ২০২৫

গবেষণায় বলা হয়েছে, উন্নত সংকেত শনাক্তকারী প্রযুক্তির মাধ্যমে মাটির নিচের যে কোনো বিস্ফোরণ শনাক্ত করা যায়। এ বিষয়ে ভূকম্পবিদ জশুয়া কারমাইকেল জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ ও ভূমিকম্পের তরঙ্গের মধ্যে ওভারল্যাপ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সংবেদনশীল ডিজিটাল সিগন্যাল ডিটেক্টরও অস্পষ্ট তথ্য দিয়ে থাকে।

আরও পড়ুনগুগলের পাঠানো ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা কতটা নির্ভরযোগ্য১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নতুন গবেষণার কারণে বিশেষজ্ঞরা ২০১২ সালের একটি প্রতিবেদনকে পুনর্বিবেচনা করছেন। তখন বলা হয়েছিল, ভূমিকম্পের সংকেত বিস্ফোরণের সংকেত ঢেকে রাখতে পারে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রাকৃতিক সিসমিক সিগন্যালের মাধ্যমে বিভিন্ন বিস্ফোরণ ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য লুকানো হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়া গত ২০ বছরে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। অনেক সময় এসব পরীক্ষাকে ভূমিকম্প হিসেবে দাবি করা হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র স

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ