শাটল ট্রেন চালুর আশ্বাসে পাটগ্রামে রেলপথ-মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার
Published: 29th, April 2025 GMT
লালমনিরহাটের বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে সরাসরি আন্তঃনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন’ চালুর দাবিতে মহাসড়ক-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। লালমনিরহাট-ঢাকা রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেসের’ যাত্রীদের জন্য লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে একটি বিশেষ ‘শাটল ট্রেন চালুর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে’ এ ঘোষণা দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার বিকালে অবরোধ স্থগিত ঘোষণার পর মহাসড়ক-রেলপথে যান চলাচল শুরু হয়। অবরোধের কারণে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর, সরকারি কলেজ মোড়, সরেঅর বাজার, বাউরা বাজার এলাকায় আটকে ছিল শত শত যানবাহন।
আন্দোলনের সমন্বয়ক ও পাটগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল বলেন, ইঞ্জিন ও কোচ সংকট কাটিয়ে বুড়িমারী-ঢাকা পথে সরাসরি ‘বুড়িমারী-এক্সপ্রেস’ চালু না হওয়া পর্যন্ত চার উপজেলার ওই ট্রেনের যাত্রীদের জন্য বুড়িমারী-লালমনিরহাট রুটে একটি শাটল ট্রেন চালুর আশ্বাস দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি।
আন্দোলন প্রত্যাহারের ফলে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের পাটগ্রাম অংশে ৩৫ ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু হয়। অপরদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দিনের মাথায় বুড়িমারী-লালমনিরহাট পথে শুরু হয় ট্রেন চলাচল। এর আগে গত সোমবার রাতে হাতীবান্ধার আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নিলে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয় এবং গতকাল সকাল থেকে লালমনিরহাট-হাতীবান্ধা পথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এদিকে গতকাল বিকালে পাটগ্রাম শহীদ আফজাল মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জি আর সারোয়ার, পাটগ্রামের ইউএনও জিল্লুর রহমান, ওসি আশরাফুজ্জামান সরকার, পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল, বুড়িমারী এক্সপ্রেস বাস্তবায়ন সংগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক এ টি জে সিদ্দিকী কাঁকন ও সদস্য সচিব আকবর বিন আফছার।
বুড়িমারী এক্সপ্রেস চালুর পর থেকেই ট্রেনটি ঢাকা-লালমনিরহাট পথে চলাচল করছে। এতে জেলার আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার যাত্রীরা সরাসরি ট্রেনটির সুবিধা পাচ্ছে না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. রাব্বি মিয়া (২০) নামের এক তরুণ আহত হওয়ার ঘটনায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। গুলির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে আহত রাব্বির মা জোহরা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গুলিবিদ্ধ রাব্বি উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের হেলাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রাব্বি পরিবারের সঙ্গে নবীনগর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি পেশায় একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নবীনগর উপজেলার টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমান (৪৮), জাহিদ মিয়া (১৯), জুবায়েদ মুন্সী (১৯), মো. আহসান উল্লাহ (৪৪) ও মো. জসিম উদ্দিন (৪৪)। তাঁরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খুরশিদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. সানি (২০) ও একই পাড়ার মো. জিসানের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও তর্ক হয়। একপর্যায়ে ঝগড়ার সময় সানি জিসানকে ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনার জেরে উভয় পক্ষ সালিস ডাকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে নবীনগর পৌর এলাকার কালীবাড়ি মোড়ের জমিদারবাড়ির মাঠে সানিসহ তাঁর লোকজন ও জিসানসহ তাঁর লোকজন সালিসে বসেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রাব্বি সানির পক্ষের সমর্থক। তবে সালিসের রায়ে সানি ও তাঁর লোকজন সম্মত হননি। সালিস ছেড়ে ওঠার সময় জিসানসহ তাঁর লোকজন সানির লোকজনের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে জিসান বন্দুক বের করে গুলি করেন। এতে রাব্বি গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রতিপক্ষের হামলায় সানি আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন রাব্বিকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, তরুণের বুকের বাঁ পাশের পাঁজরে গুলি লেগেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।