আন্তোনিও রুডিগার কয় ম্যাচ নিষিদ্ধ হবেন—এটাই ছিল আলোচনা। কিন্তু সেই আলোচনার ভেতরেই ভেসে এল নতুন খবর। মঙ্গলবার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করানোর পর মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের এই জার্মান সেন্টারব্যাকের।

রুডিগারের নিষিদ্ধ হওয়ার আলোচনার কারণ গত শনিবারের কোপা দেল রে ফাইনাল, যেখানে বার্সেলোনার কাছে ৩–২ গোলে হারে রিয়াল। শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দেড়েক আগে রেফারির সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় বেঞ্চ থেকে তেড়ে গিয়েছিলেন রুডিগার। সতীর্থরা তাঁকে টেনে ধরে থামান। তখন রিয়ালের বেঞ্চ থেকে রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়ার প্রতি কিছু একটা ছুড়ে মারা হয়। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এক টুকরা বরফ ছুড়ে মারা হয়েছিল রেফারির প্রতি এবং এই কাজটি রুডিগারই করেছেন।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না৬ ঘণ্টা আগে

তখনই আলোচনা শুরু হয়, এমন কাজের জন্য বড় ধরনের শাস্তি পেতে পারেন রুডিগার। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইফ) আচরণবিধির ১০১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রেফারিকে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ১২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাও পেতে পারেন তিনি। বিবিসি জানিয়েছে, তাঁর এই আচরণকে আরও মারাত্মক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হলে তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ এক বছরও নিষিদ্ধ হতে পারেন রুডিগার। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এ বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে আরএফইফের শৃঙ্খলা কমিটি।

রুডিগার অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমাও চেয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে। কিন্তু তাতেও তাঁর শাস্তি না–ও কমতে পারে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন রুডিগার।

কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞার খড়্গ নেমে আসার আগেই রুডিগার মাঠ থেকেই ছিটকে পড়লেন। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বাঁ হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করানোয় ছয় থেকে সর্বোচ্চ আট সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। যদিও রিয়ালের বিবৃতিতে রুডিগারকে কত দিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে তা জানানো হয়নি, ‘বাঁ হাঁটুর বাইরের অংশের মেনিসকাস ছিঁড়ে যাওয়ায় রুডিগারের আজ অস্ত্রোপচার করানো হয়।’

আরও পড়ুনযে দুটি দলের কোচ হওয়া ক্লপের স্বপ্ন৮ ঘণ্টা আগে

ইএসপিনকে সূত্র জানিয়েছে, রুডিগারকে দুই মাস কিংবা আট সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। এর অর্থ হলো লা লিগায় তাঁর মৌসুম শেষ হয়ে গেছে এবং ১৪ জুন থেকে যুক্তরাস্ট্রে শুরু হতে যাওয়া ক্লাব বিশ্বকাপেও খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। লা লিগা পয়েন্ট টেবিলে ৩৩ ম্যাচে ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে ৪ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল। ৩৩ ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহ ৭২ পয়েন্ট। দুই দলই আর ৫টি করে ম্যাচ খেলবে।

সূত্র ইএসপিএনকে জানিয়েছে, রিয়াল চায় আগামী প্রাক্‌–মৌসুমে রুডিগারকে ফিট অবস্থায় পেতে। তার আগে তাঁকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না রিয়াল। যদিও রুডিগার ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের হয়ে এবং নেশনস লিগে জার্মানির হয়ে খেলতে তিনি ‘সবকিছুই করবেন’।

চলতি মৌসুমে রিয়ালের জন্য অপরিহার্য ছিলেন রুডিগার। একাডেমি থেকে আসা রাউল আসেনসিও ছাড়া রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির হাতে সেন্টারব্যাক হিসেবে শুধু রুডিগারই ছিলেন। কতটা অপরিহার্য ছিলেন রুডিগার সেটা জানাচ্ছে ট্রান্সফারমার্কেট। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে রুডিগারের (৪১০১ মিনিট) চেয়ে শুধু ফেদে ভালভের্দেই বেশি সময় মাঠে ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ