অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদ তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের ১৩ বছর কারাদণ্ডের সাজা বাতিল করে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের সাজা বাতিল করে খালাস দেওয়া হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে আমান ও তার স্ত্রীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব।

রায়ের পরে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগের রায়ে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তারা সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন। এর ফলে আমান উল্লাহ আমানের আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা থাকল না।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৬ মার্চ সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় আমান দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক)। পরে ওই বছরের ২১ জুন আমান উল্লাহ আমানকে ১৩ বছর এবং তার স্ত্রী সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তারা। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট তাদের খালাস দেন। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে দুদক। আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিলটি পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।

২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ দুদকের এই মামলায় আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতা আমান দম্পতি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আপিল দায়ের করেন। বুধবার ওই আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আপ ল ব ভ গ ল হ আম ন ব ত ল কর ১৩ বছর আম ন র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ